চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কম ভোটার উপস্থিতি, অনিয়ম-সহিংসতা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। ভোটের পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে বরাবরের মতই একটি লিখিত বক্তব্য সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন তিনি। এ নির্বাচন কমিশনার বলছেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে এবং ভোটের দিন মোট চারজনের প্রাণহানি প্রকারান্তরে চারটি পরিবারের প্রাণহানির নামান্তর। তার ভাষায়, সহিসংতা, কেন্দ্র দখল, পুলিশের গাড়ি ও ইভিএম ভাংচুরের ঘটনা এ নির্বাচনকে কলঙ্কিত করেছে। এ নির্বাচনে যে অরাজকতা দেখা গেছে, তাতে আমি হতাশ।… আমার আশঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্য হল এবং সাবধানবাণীতে কোনো কাজ হল না। এ ধরনের তাণ্ডব বন্ধ করতে আমাদেরকে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ খুঁজে পেতে হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার পরিবর্তন ছাড়া তা সম্ভব হবে না। সেজন্য দল-মত নির্বিশেষে সকলের ঐকমত্য প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন মাহবুব তালুকদার। খবর বিডিনিউজের।
ভোটের হার নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচনে ভোট পড়েছে শতকরা সাড়ে ২২ ভাগ মাত্র। এত অল্প সংখ্যক ভোট গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নিয়ামক হতে পারে না। এই পরিস্থিতি নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থাহীনতার পরিচায়ক, যা গণতন্ত্রের জন্য এক অশনিসংকেত। সুষ্ঠু পরিবেশে অবাধ, নিরপেক্ষ, আইনানুগ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে ভোটার উপস্থিত অবশ্যই বেশি হত। গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় সব নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়ারও তাগিদ দেন তিনি। গত বুধবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে যে নির্বাচন হয়েছে, তাকে ‘অনিয়মের নির্বাচনের একটি মডেল’ হিসেবে বর্ণনা করেন মাহবুব তালুকদার।
তিনি বলেন, আগামীতে দেশব্যাপী যেসব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তাতে এই মডেল অনুসরণ করা হলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে বিশ্বসভায় আমরা আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখতে পারব না। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারব না, তা মেনে নেওয়া যায় না।