ভোটহীন নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র চলছে, অভিযোগ সমমনা পরিষদের

সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়শন নির্বাচন

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়শনের (সিঅ্যান্ডএফ) ত্রিবার্ষিক নির্বাচনে সমমনা পরিষদের কাউকে মনোনয়নপত্র নিতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন সমমনা পরিষদের সমন্বয়ক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু। সমমনা পরিষদের সদস্যরা ‘পতিত আওয়ামী স্বৈরচারী সরকারের দোসর’ এমন অভিযোগ এনে ভোটহীন নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র চলছে বলেও অভিযোগ করা হয়। গতকাল বিকেলে নগরীর আগ্রাবাদে একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু আরো বলেন, সমমনা পরিষদের কেউ মনোনয়নপত্র নিতে পারেননি। চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ৫০ বছরের পুরাতন একটি প্রতিষ্ঠান যার কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় শতভাগ গণতন্ত্রের ব্যবহার সারা বাংলাদেশে প্রশংসিত। কিন্তু এই ৫০ বছরের ধারাবাহিক সুষ্ঠু নির্বাচনের ঐতিহ্যকে ভূলুন্ঠিত করে গত ২৭ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনদিন চেষ্টা করেও সমমনা পরিষদের কোনো প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে পারেননি। বিপুল সংখ্যক বহিরাগত নিয়ে ‘বৃহত্তর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ঐক্য পরিষদ’ নামধারী গুটিকয়েক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট তাদের নির্ধারিত সদস্যদের বাইরে সাধারণ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের বৃহত্তম সংগঠন ‘সমমনা পরিষদ’ এর কোনো সদস্যকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে না দিয়ে পেশিশক্তি প্রদর্শনের এক ন্যাক্কারজনক অধ্যায়ের সূচনা করে।

সিসিটিভি ক্যামেরায় কালো ট্যাপ লাগানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, গতকাল ও আজ সারাদিন বিপুল বহিরাগতদের নিয়ে সিঅ্যান্ডএফ টাওয়ারের সকল সিসিটিভি ক্যামেরায় কালো ট্যাপ লাগিয়ে তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ডের সকল প্রমাণ ঢাকতে চেয়েছে। সমমনা পরিষদ নির্বাচনমুখী, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী একটি সংগঠন যার নেতৃবৃন্দ প্রায় ২ হাজার ৮০০ নিবন্ধিত সদস্যের ভোটে ও আস্থায় বারবার বিজয়ী। তাই তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় না গিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার এই হীন অপচেষ্টা করছে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহে ইচ্ছুক সমমনা পরিষদের নেতৃবৃন্দের দফায় দফায় লাঞ্ছিত করে গুটিকয়েক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের পেশিশক্তি প্রদর্শন বৈষম্য বিরোধী নব বাংলাদেশের অভ্যুদয়কালে বৈষম্য প্রতিষ্ঠিত করার অপপ্রয়াসের শামিল। সদস্যদের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ন করার এই ধারাকে ব্যবসায়ী সমাজের জন্য অশনিসংকেত এবং এটি সদস্যদের জীবনজীবিকা পেশাগত মর্যাদার সাথে সাংঘর্ষিক। বিষয়টি জানিয়ে আমরা অবিলম্বে নির্বাচনের পরিবেশ সুনিশ্চিত করার জন্য পরিচালক ও রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন, শ্রম অধিদপ্তর ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি দাবি জানাচ্ছি। অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির ২৯টি পদের বিপরীতে কেবল ২৯টি মনোনয়নপত্র দাখিলের লক্ষ্যে সদস্যদের মনোনয়নপত্র পেশিশক্তির দাপট দেখিয়ে নিজেদের জিম্মায় রেখে দেয় সেই ‘বৃহত্তর সি অ্যান্ডএফ এজেন্ট ঐক্য পরিষদ’ নামের সংগঠনটি।

এ সময় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হওয়া মো. নাজমুল, অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ও পার্থ প্রতিম বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন।

অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক বলেন, আমি গতকাল যখন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে যাই, তখন দেখি সাইফুল ভাই অন্যদের সংগ্রহ করা মনোনয়নপত্র নিয়ে নিচ্ছেন। আমি তাকে বললাম, আমারটাও কি আপনি নিয়ে নিবেন? প্রত্যুত্তরে তিনি কোনো উত্তর দেননি। পার্থ প্রতিম বড়ুয়া বলেন, আমি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার জন্য যখন যাই, আমার থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে তারা বহিরাগতদের নিয়ে আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। সৌভাগ্যবশত আমাদের সমমনা পরিষদের অন্যান্য নেতা ও সদস্যরা ছুটে আসায় বেশি খারাপ কিছু ঘটেনি। এসব বিষয়ে আইনগত কোনো পদক্ষেপ কিংবা কোনো কর্মসূচি দিবেন কিনা জানতে চাইলে কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, আমরা চাচ্ছি নির্বাচনে পরিবেশ সুনিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাই আন্তরিক হোক। আমরা দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ বিবেচনা করে কোনো প্রকার কর্মসূচি দিতে চাই না। পাশাপাশি চট্টগ্রাম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন আমাদের সংগঠনের সুনাম রক্ষায় কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চাই না।

সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সমমনা পরিষদের উপদেষ্টা এমএ সাত্তার, আবদুল গণি, এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন, মিচ্ছু সাহা, ফয়েজুল্লাহ মজুমদার প্রমুখ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটিতে তারুণ্য উৎসব
পরবর্তী নিবন্ধবিভিন্ন স্থানে শীতবস্ত্র বিতরণ