ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের (প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার) প্যানেল তৈরি করতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল নির্বাচন কমিশনের উপ–সচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন–এর সই করা এ সংক্রান্ত চিঠি এসেছে চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানা যায়, আগামীকাল থেকে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রামে সকল সরকারি–আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে–শিক্ষক–কর্মকর্তাদের তালিকা চেয়ে চিঠি পাঠানো হবে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে শ্রেণি বা গ্রেড ভিত্তিক কর্মকর্তা–কর্মচারীর তালিকা সংগ্রহ করা হবে। ইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় প্যানেল প্রস্তুত করতে হবে।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. বশির আহমেদ আজাদীকে বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতের ব্যাপারে আজকে (গতকাল) নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে চিঠি পেয়েছি। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতে আমাদেরকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। আমরা কাল–পরশু থেকে প্রতিটি সরকারি–আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে–শিক্ষক–কর্মকর্তাদের তালিকা চেয়ে চিঠি পাঠানো শুরু করবো। প্যানেল তৈরির সুবিধার্থে প্রতিটি সরকারি–আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা থেকে শ্রেণি বা গ্রেডভিত্তিক কর্মকর্তা–কর্মচারীর তালিকা সংগ্রহ করা হবে। এবার চট্টগ্রামে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়বে না বলে জানা গেছে। তবে বুথের সংখ্যা আরও কমতে পারে। এবার নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ৪০০ জন মহিলা ভোটারের জন্য একটি করে বুথ করা হলেও এবার ৫০০ জন মহিলা ভোটারের জন্য একটি করে বুথ করা হবে। একই ভাবে আগে ৫০০ জন পুরুষ ভোটারের জন্য একটি করে বুথ ছিল। এবার প্রতিটি বুথে ৬০০ জন পুরুষ ভোটার থাকবে। এভাবে ভোটকেন্দ্র ও বুথ না বাড়িয়ে বাড়তি ভোটারদের একোমোডেট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানা গেছে, গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে–১৬ আসনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ২০২৩টি। বুথের সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৭৩২টি। ভোট কেন্দ্র ও ভোট কক্ষ অনুযায়ী ৪৩ হাজার ২১৯ জন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার সাথে অতিরিক্ত ১০ শতাংশসহ ৪৭ হাজার ৫৪৪ জনের প্যানেল তৈরি করা হয়েছিল। সুতরাং আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র এবং বুথের সংখ্যা না বাড়লে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারও না বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সমান ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত করা হতে পারে বলে জানা গেছে। প্যানেলে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছে:
প্রিজাইডিং অফিসার: প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা, ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা এবং সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কলেজ–মাদ্রাসার শিক্ষক, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংক–বিমার কর্মকর্তা এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার: দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা, কলেজ ও মাদ্রাসার ডেমনস্ট্রেটর, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। পোলিং অফিসার: বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও প্রাথমিক–মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। চিঠিতে নির্বাচন কমিশন বলেছে, সব শর্ত মেনে প্রস্তুতকৃত প্যানেলের চূড়ান্ত তালিকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাতে হবে। চিঠিতে বলা হয়, চতুর্থ শ্রেণির (জাতীয় বেতন স্কেল ১৭–২০ গ্রেড) কোনও কর্মচারীকে প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। তবে প্রিজাইডিং অফিসারদের সহায়ক হিসেবে আলাদা তালিকা প্রস্তুত করা যেতে পারে। প্যানেল তৈরির সুবিধার্থে প্রতিটি সরকারি–আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা থেকে শ্রেণি বা গ্রেডভিত্তিক কর্মকর্তা–কর্মচারীর তালিকা সংগ্রহ করা হবে।