ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে চাহিদা বাড়ায় এই বছর লোহাগাড়ায় বেড়েছে সরিষার আবাদ। চলতি মৌসুমে গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ জমিতে সরিষার চাষ করেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনকূলে থাকায় ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় চলতি বছর ১৮৪ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। যা গত বছরের দ্বিগুণ। সম্ভাব্য সাড়ে ৪ টন সরিষা উৎপাদন হবে। সাধারণত সরিষা থেকে ৪০ শতাংশ তেল পাওয়া যায়। দেশে সয়াবিনের চাষ সহজ না হওয়ায় সরিষাকে জনপ্রিয় করে তোলার চেষ্টা করছে কৃষি বিভাগ। এছাড়া সরিষা চাষ শুরুর সময় বৃষ্টি থাকায় চাষাবাদে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে। চলতি বছর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৩৬০ জনকে বীজ সহায়তা, ৪০ জনকে প্রদর্শনীর জন্য বীজ ও উপকরণ এবং ২৫০ জনকে প্রণোদনার সার ও বীজ প্রদান করা হয়েছে।
কৃষকরা জানান, অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষা চাষে খরচ অনেক কম। সরিষার জমিতে সার, সেচ ও কীটনাশকের প্রয়োগ একেবারেই কম। নভেম্বর মাসের শুরুতে সরিষার চাষ শুরু হয়। তবে ওই সময় বৃষ্টি হওয়ায় এই বছর একটু দেরিতে সরিষা চাষ করতে হয়েছে। ফলন পাকতে ৭৫ থেকে ৯০ দিন সময় লাগে। এখন চলছে শেষ সময়। সমতল ও তুলনামূলক উঁচু জমি সরিষা চাষের জন্য উপযুক্ত। তুলনামূলক কম পরিশ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। তাছাড়া সরিষার পাতা ও ফুল জমিতে পড়ে জৈবসার তৈরি করে, যা বোরো আবাদের ফলন বাড়ায়।
পুটিবিলার কৃষক আ.স.ম দিদারুল আলম জানান, চলতি বছর তিনি এক একর জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। ২৫০ কেজি সরিষা পাওয়ার আশা করছেন। যা থেকে প্রায় ৯০ কেজি তেল পাওয়া যাবে। যা দিয়ে সারা বছর নিজের পরিবারের ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণ হবে।
চুনতির কৃষক শাহাদত হোসেন সেকু জানান, তিনিও এক একর জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছেন। সরিষা থেকে তেল প্রসেসিং করে নিজেদের চাহিদা পূরণের পর বিক্রিও করেন। তিনি বলেন, গত বছর সরিষার দাম ভালো ছিল, চাহিদাও ছিল। তাই এবারও সরিষা চাষ করেছি ফলন ভালো হবে। উপযুক্ত দাম পেলে আগামী বছর সরিষা চাষে আরো অনেকেই ঝুঁকে পড়বে।
লোহাগাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী শফিউল ইসলাম জানান, ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণে সরিষা চাষে জোর দিয়েছে সরকার। এজন্য কৃষকদের প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এবছর লোহাগাড়া উপজেলায় ১৮৪ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যেখানে বারি সরিষা ১৪, বারি সরিষা ১৭, বারি সরিষা ১৮ ও বিনা সরিষা ৯ এর আবাদ বেশি হয়েছে। ভালো দামের আশায় কৃষকরা সরিষা চাষ করেছেন।