ভোগান্তি শেষে ৬ শর্তে শাটল চালু

মামলা প্রত্যাহার চেয়ে মানববন্ধন

চবি প্রতিনিধি | সোমবার , ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেন গত বৃহস্পতিবার রাতে দুর্ঘটনার পর দুইদিন ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। রোববার শাটল চলার কথা বললেও চলেনি। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক শেষে ছয় শর্তে ট্রেন চালাতে রাজি হন রেলওয়ে কর্মচারীরা। গতকাল রোববার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ছয় শর্তের কথা জানান রেলওয়ে কর্মচারীরা। এরপর রোববার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের সময়সূচি থেকে শাটল ট্রেন নিয়মিত চলাচল করে।

রেলওয়ের কর্মচারীদের শর্তগুলো হলো, পাহাড়তলী থেকে প্রতিটি ইঞ্জিনের সঙ্গে রেলওয়ে পুলিশের (জিআরবি) কমপক্ষে চারজন সদস্য দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, রেলওয়ে কর্মচারীদের প্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসন মিলে বৈঠক করতে হবে। ওই বৈঠকে যাবতীয় সুযোগসুবিধা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা, ট্রেনের ছাদে ও ইঞ্জিনে শিক্ষার্থী উঠলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে, ছাত্রদের সচেতনতা বাড়াতে শ্রেণিকক্ষে কাউন্সিলিং করতে হবে এবং গত বৃহস্পতিবার লোকোমাস্টারদের লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. আবিদুর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনার পর লোকোমাস্টারদের লাঞ্ছিত করে শিক্ষার্থীরা। এরপর লোকোমাস্টাররা ওই রুটে ট্রেন চালাতে আর রাজি হননি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর শাটল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কর্মচারীদের প্রতিনিধিরা ছয়টি শর্ত দিয়েছেন। এখন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

মামলা প্রত্যাহার চায় শিক্ষার্থীরা : চবি উপাচার্যের বাসভবন ও পরিবহন দপ্তরে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় প্রশাসনের দায়ের করা মামলার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

গতকাল রোববার বেলা সাড়ে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত হয় এ কর্মসূচি।

এসময় শিক্ষার্থীরা ৪ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো, শিক্ষার্থীদের নামে দেয়া অজ্ঞাতনামা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আহত শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ সুস্থতার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে। শাটল ট্রেনে সকলের সিট নিশ্চিত করতে হবে এবং ফিটনেস বিহীন বগি ও ইঞ্জিন সংস্কার করতে হবে এবং চবি মেডিকেলে অভিজ্ঞ ডাক্তার এবং পর্যাপ্ত মেডিসিনের ব্যবস্থা করতে হবে।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, শাটল ট্রেনে শিক্ষার্থী আহতের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছিল। এর মধ্যে কে বা কারা ষড়যন্ত্র করে ভাঙচুর চালিয়েছে। যারা ভাঙচুর চালিয়েছেন তারা সাধারণ শিক্ষার্থী হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ছিল সময় নিয়ে তদন্ত করে জড়িতদের চিহ্নিত করে তারপর মামলা দেয়া। কিন্তু তা না করে প্রশাসন ঢালাওভাবে শিক্ষার্থীদের নামে মামলা দিয়েছে। এটা কোনোভাবেই উচিত হয়নি। আমরা দ্রুত এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

এর আগে গত শনিবার রাতে মামলা দুটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যেগুলোর বাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ ও ভারপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক। ২ মামলায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। এছাড়াও অন্তত ১ হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনাম উল্লেখ করা ১৪ জনের মধ্যে ১২ জনই ছাত্রলীগের
পরবর্তী নিবন্ধছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাকে পিটিয়ে দাঁত ফেলে দিলেন এডিসি হারুন