ভোঁ দৌড় দিয়ে ৫ তলা থেকে লাফ যুবকের

কোর্টহিলের আইনজীবী ভবন

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২২ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

নগরীর কোর্টহিলের আইনজীবী ভবনের ৫ তলার করিডোর থেকে এক যুবক লাফ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তার নাম মো. সাইফুদ্দিন (৩৫)। তিনি নোয়াখালী জেলার লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা। গতকাল বিকাল আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে সিএনজি টেক্সিযোগে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আইনজীবী ভবনের ৫ তলার করিডোরের দেয়ালে হেলান দিয়ে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে মোবাইল ফোন টিপছেন। আরেক ব্যক্তি করিডোর হয়ে অন্যত্র যাচ্ছেন। এর মধ্যে করিডোরের মাঝ বরাবর থাকা একটি ছোট গলি থেকে ভৌঁ দৌড় দিয়ে এসে করিডোরের দেয়ালের উপর দিয়ে লাফ দেন সাইফুদ্দিন। পরে বিষয়টি লোকজনের নজরে পড়লে দ্রুত নিচে ছুটে যান। আইনজীবী ভবনের নীচের গেটে দাঁড়িয়েছিলেন সমিতির কেয়ারটেকার মোহাম্মদ ইউছুফ। উপর থেকে নীচে সাইফুদ্দিন নামের ওই যুবক লাফ দেওয়ার পর তিনি ঘটনাস্থলে এগিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত সাইফুদ্দিনকে সিএনজি টেঙিতে করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সাথে ছিলেন সমিতির কেয়ারটেকার মোহাম্মদ ইউছুফ।

মোহাম্মদ ইউছুফ দৈনিক আজাদীকে বলেন, গুরুতর আহত সাইফুদ্দিনের সাথে লোকজন আমাকেও গাড়িতে তুলে দেন। আমি তাকে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তার পায়ে, মুখে ও শরীরের বেশ কিছু জায়গায় গুরুতর জখম হয়েছে। তার পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন। পরে আমি চলে আসি। তিনি বলেন, সিএনজিতে সাইফুদ্দিন আমার সাথে টুকটাক কথা হয়েছে। তিনি জানায়, তার স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দিচ্ছেন, এ জন্য তিনি লাফ দিয়েছেন। সাইফুদ্দিনের স্ত্রীর নাম মিনি বেগম। মিনি বেগম গত সেপ্টেম্বরে সাইফুদ্দিনকে ডিভোর্স দেন। তিন মাস পূর্ণ হওয়ায় মিনি বেগম গতকাল আইনজীবী ভবনের ৫ তলায় থাকা তার আইনজীবীর চেম্বারে কাগজপত্র নিতে গিয়েছিলেন। সাথে ছিলেন সাইফুদ্দিনও। মিনি বেগমের আইনজীবী হচ্ছেন নূর মোহাম্মদ জিতু। ৫ তলার ৫১৯ নম্বর কক্ষ হচ্ছে তার চেম্বার।

দৈনিক আজাদীকে এসব তথ্য জানিয়ে আইনজীবী নূর মোহাম্মদ জিতু বলেন, মিনি বেগম যখন আমার চেম্বারে আসেন তখন আমি দুপুরের খাবার খাচ্ছিলাম। তার সাথে সাইফুদ্দিনকেও দেখতে পেয়েছি। যেহেতু খাবার খাচ্ছিলাম তাই তারা বাইরে চলে যান। একটু পর এসে ফের বাইরে চলে যান। একপর্যায়ে শুনতে পায়, কেউ একজন ভবন থেকে নীচে লাফ দিয়েছেন। কেন মিনি বেগম সাইফুদ্দিনকে ডিভোর্স দিয়েছেন জানতে চাইলে আইনজীবী নূর মোহাম্মদ জিতু বলেন, সাইফুদ্দিনের আগেও একবার বিয়ে হয়েছে। তার দুটি সন্তানও রয়েছে। এসব জানতে পেরে মিনি বেগম তাকে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। মিনি বেগম গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দৈনিক আজাদীকে বলেন, তার বাড়িও নোয়াখালীতে। থাকেন নগরীর বাংলাবাজারের ডেবার পাড় এলাকায়। ডাক্তার বলেছেন রক্ত লাগবে, তিনি তা জোগাড়ের চেষ্টা করছেন। সাইফুদ্দিন নড়াচড়া করতে পারছেন না বলেও জানান তিনি।

জেলা আইনজীবী সমিতির তথ্য ও সহকারী হিসাব কর্মকর্তা দৈনিক আজাদীকে বলেন, ঘটনা শোনার পর সিসিটিভি ফুটেজ চেক করা হয়। সেখানে দেখা যায়, ভিকটিম ওই যুবক ভৌঁ দৌড়ে দিয়ে এসে করিডোরের দেয়ালের উপর দিয়ে লাফ দিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাল প্রকাশ্য নিলামে তোলা হচ্ছে ২ কোটি টাকার খেঁজুর
পরবর্তী নিবন্ধবান্দরবানে চার ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগ