বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ার ফলে ডুবে যাওয়া ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ খ্যাত ঝুলন্ত সেতুটি ১ মাস ২৫ দিন পর ভেসে উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন থেকে পানি নেমে যায় বলে নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা।
এদিকে, সেতু থেকে হ্রদের পানি নেমে যাওয়ার পর সেতুর পাটাতন পরিষ্কার ও মেরামতের কাজ করছে পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সেতুতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা করা না হলেও শুক্রবার থেকে সেতুতে প্রবেশের টিকেট বিক্রয় শুরু হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন থেকে কাপ্তাই হ্রদের পানি নেমে গেছে। এখন আমরা সেতুর পাটাতনসহ অন্যান্য মেরামত ও পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার কাজ করছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে শুক্রবার থেকে সেতুটিতে প্রবেশ সবার জন্য উন্মুক্ত করা হতে পারে। তিনি বলেন, রাঙামাটিতে অক্টোবর জুড়ে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার কারণে জেলার বাহিরের পর্যটকরা না আসলেও স্থানীয়রা যেন প্রবেশ করতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি যাওয়ার আগেই ডুবে যায় রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুটি। হ্রদের সর্বোচ্চ পানির স্তর ১০৯ মিনস সি লেভেল (এমএসএল) হলেও হ্রদে ১০৪ এমএসএলের অধিক পানি বাড়লেই ডুবে যায় ঝুলন্ত সেতুটি। চলতি বছরের ২৩ আগস্ট বৃষ্টি ও উজানের ঢলে হ্রদের পানি বাড়ায় ডুবে যায় ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ খ্যাত ঝুলন্ত সেতুটি। অবশেষে ১ মাস ২৫ দিন পানিতে নিমজ্জিত থাকার পর বৃহস্পতিবার ভেসে উঠল। প্রসঙ্গত, ১৯৮৩ সালে রাঙামাটি জেলা শহরের তবলছড়ি এলাকায় দুই দ্বীপের মধ্যে সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। যা ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ খ্যাত হিসেবে দেশে–বিদেশে সমাদৃত। কাপ্তাই হ্রদের স্বাভাবিক জল সীমার নিচেই সেতুটি নির্মিত হওয়ায় প্রতিবছরই হ্রদে পানি বাড়লে ডুবে যায় সেতুটি। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ও প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, সেতু উপরে উঠানোর সুযোগ নেই। সেতুটি উঁচু করতে চাইলে নতুন করে তৈরি করতে হবে।
গত ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। নিরুৎসাহিত করণের কথা বলা হলেও মূলত এই সময়টাতে পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটক ভ্রমণে কার্যত নিষেধাজ্ঞা চলছে। দৃশ্যত পর্যটক শূন্য এখন তিন পার্বত্য জেলা।