ভেঙে ফেলা হচ্ছে দেওয়ান স্কয়ার

সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ‘কয়েক কোটি টাকার ভবন’ মাত্র ১৩ লাখ টাকায় নিলামে দেয়ার অভিযোগ

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৯:৩৫ পূর্বাহ্ণ

নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এ্যালাইমেন্টের মধ্যে পড়া সুলতান আহমদ দেওয়ান ওয়াকফ এস্টেটের ৬ তলা বিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন দেওয়ান স্কয়ার অবশেষে ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অভিযানে ভবনটি খালি করে ভাঙার জন্য নিলাম গ্রহীতাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। তবে ছয় তলা বিশিষ্ট একটি ভবন মাত্র ১৩ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়ায় দুদকসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে, নিলাম অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ একটি সিন্ডিকেট কারসাজি করে কয়েক কোটি টাকা দামের ভবনটির প্রকৃত দর উল্লেখ না করে মাত্র ১৩ লাখ টাকায় নিলাম ডেকেছে।

সিডিএ সূত্র জানিয়েছে, নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এ্যালাইমেন্টের মধ্যে পড়ে যায় সুলতান আহমদ দেওয়ান ওয়াকফ এস্টেটের ৬ তলা বিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন দেওয়ান স্কয়ার। ভবনটি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওয়াকফ স্টেটের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সিডিএর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এ্যালাইমেন্টে পড়ায় ভবনটি ভাঙা জরুরি হয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভবনটি ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু করে বেশ আগে। নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেও সিডিএ ভবনটি ভাঙার ব্যবস্থা করতে পারছিল না। মামলা মোকদ্দমার কারণে সবকিছু জটিল আকার ধারণ করেছিল।

ইতোমধ্যে সিডিএ ভবনটি নিলামে বিক্রির জন্য টেন্ডার আহ্বান করে। গত ৩১ জানুয়ারি টেন্ডার জমা দেয়ার শেষদিন ছিল। নিলামে বেশ কয়েকজন আগ্রহ প্রকাশ করলেও ১৩ লাখ টাকার সামান্য বেশি সর্বোচ্চ দর ওঠে। সিডিএ সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে জনৈক মোজাহের সওদাগর বরাবরে অনুমোদন দেয়। গতকাল মোজাহের সওদাগরকে ভবনটি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। মাত্র ১৩ লাখ টাকায় ছয় তলা একটি ভবন বিক্রি করায় সংঘবদ্ধ একটি সিন্ডিকেটের অপতৎপরতার অভিযোগ উঠেছে। এতে বলা হয়, কয়েক কোটি টাকা দামের ভবনটি মাত্র ১৩ লাখ টাকায় বিক্রি করে সরকারকে মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুদকে অভিযোগ করা হয়। সাথে গণপূর্ত বিভাগের ভবনটির ব্যাপারে করা এসেসমেন্টের তথ্য উপাত্তও প্রদান করা হয়েছে।

তবে সিডিএর সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা বলেছেন, ছোট্ট একটি ভবন। সর্বোচ্চ ১২শ’ স্কয়ার ফুট আয়তনের ভবনটির নিলাম অনুষ্ঠানে কোনও অনিয়ম করা হয়নি। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ভবনটির টেন্ডার করা হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতাকে ভবনটি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। ভবনটির মূল্য কয়েক কোটি টাকা দাবি করার বিষয়টিকে ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা বলেছেন, পুরানো ভবন সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা না থাকায় এমন ‘আজব’ দাবি করা হচ্ছে।

গতকাল ভবনটি থেকে ব্যবসায়ীদের সরিয়ে নিলাম গ্রহীতাকে সেটি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) তাহমিনা আফরোজ চৌধুরীর নেতৃত্বে এই সময় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান, সহকারী প্রকৌশলী মোর্শেদুল হক চৌধুরী, উপ সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, মিথু চৌধুরী প্রমুখও উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজেলেদের জালে ধরা পড়ল ২৪ লাখ টাকার নাগুমাছ
পরবর্তী নিবন্ধভোগ্যপণ্য পরিবহনে পাটের বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে না