ভেঙে পড়ল সমাবেশের মঞ্চ, নেতাকর্মীদের হাতাহাতি

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৩ জানুয়ারি, ২০২২ at ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ

সভা চলাকালে ভেঙে পড়েছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সমাবেশের মঞ্চ। তবে এতে কেউ গুরুতর আহত হননি। বন্ধ হয়নি সভাও। দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে গতকাল বুধবার সকালে কর্ণফুলী উপজেলার সিডিএ আবাসিক মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনের তিনবারের সাবেক নির্বাচিত সাংসদ ও বিএনপির কেন্দী্রয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সরওয়ার জামাল নিজামকে লাঞ্চিত করেছে নিজ দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। তার শার্ট-গেঞ্জি ছিঁড়ে ফেলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঞ্চের পেছনে আনোয়ারা-কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে কয়েকজন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সভা শুরুর আগে সমাবেশস্থলে এসে উপস্থিত হন সরওয়ার জামাল নিজাম। এসময় পেছন থেকে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে ধাক্কা দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আমীর খসরু বক্তব্য রাখার সময় আনোয়ারা উপজেলা বিএনপি নেতা হেলাল ও মোস্তাফিজ সমর্থিত এক বিএনপি কর্মী মঞ্চে বসা থাকা সরওয়ার জামাল নিজামের উপর হামলা চালায়। এসময় তার শার্ট ও গেঞ্জি ছিঁড়ে ফেলা হয়। পরে সরওয়ার জামাল নিজাম ‘আমাকে বাঁচাও বাঁচাও’ বললে নেতাকর্মীরা এগিয়ে এসে রক্ষা করে গাড়িতে তুলে দেয়। এসময় নেতাকর্মীদের ধাক্কাধাক্কিতে হঠাৎ মঞ্চটি ভেঙে পড়ে। তখন আমীর খসরুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ মঞ্চ থেকে নীচে নেমে যান। আমীর খসরুও তার বাকি বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ জেলার আজকের সমাবেশ বাঁধ ভেঙেছে সরকার পতন আন্দোলনের। কিছুতেই জনগণকে আটকে রাখা যাবে না। এত লোকের সমাবেশে মঞ্চ তো ভাঙবেই। আন্দোলন বন্ধ হবে না, চলতে থাকবে। দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ।
উল্লেখ্য, গত ৩০ নভেম্বর নগরের বাকলিয়া কালামিয়া বাজারের কে বি কনভেনশন হলের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভা। সেদিনও সভামঞ্চ ভেঙে পড়েছিল।
কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আজাদীকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ না রাখাতে নেতাকর্মীরা অনেকটা ক্ষুব্ধ। তবে কর্ণফুলী উপজেলার কোনো নেতাকর্মী তাকে লাঞ্চিত করে নি। যারা লাঞ্চিত করেছে তারা সবাই আনোয়ারার।
এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে জানি না। তবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি (সরওয়ার জামাল) বাইরে থাকায় দলের তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সৃষ্ট ক্ষোভ থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে। দুই গ্রুপের মারামারি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করতে আমরা বসছি।
সকাল থেকেই নেতাকর্মীদের ভিড় :
সভাবেশ শুরুর কথা ছিল সকাল ১১ টায়। তবে তার আগে থেকেই নেতকর্মীরা মিছিল নিয়ে যোগ দিতে থাকে। দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শহীদুল আলমসহ ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপি নেতাকর্মীদের নেতৃত্ব একাধিক মিছিল দেখা গেছে। অতীতে দক্ষিণ জেলা বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হত নগরে। কেন্দ্রীয় নির্দেশনার কারণে এবার শহরের বাইরে অর্থাৎ দক্ষিণ জেলার আওতাভুক্ত উপজেলায় সমাবেশ করতে হয়।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত হয়েছে। সমাবেশের অনুমতি পেতে আমাদের বেগ পেতে হয়। প্রশাসন অনুমতি দেয় রাতে। এরপরও নেতাকর্মীদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সমাবেশ সফল হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজ নগরীতে গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধআগামীতে তাদের ঘুঘুর ফাঁদ দেখাবো : খসরু