ভারী বর্ষণে হঠাৎ নগরীর তামাকুমণ্ডি লেনের দারুল ফজল মার্কেট ভবনে মহানগর আওয়ামী লীগের অফিসের রেলিংয়ের একাংশ ভেঙে পড়েছে। ভবনের ভাঙা অংশ সামনের ফুটপাতের দিকে টিন শেডের উপর পড়ায় বড় ধরনের হতাহতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেলেও এই দুর্ঘটনায় ৪ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা ভবন হিসেবে পরিচিত দারুল ফজল মার্কেটটি অবাঙালির পরিত্যক্ত সম্পত্তি। এটি বর্তমানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে ন্যস্ত। ভবনটির দেখভাল করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। ভবনটি দীর্ঘদিন আগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। চরম ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনটিতে নগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠনের অফিস রয়েছে। এই ভবনটি মুক্তিযোদ্ধা ভবন হিসেবে পরিচিত হলেও নগর আওয়ামী লীগের সাথে এই ব্যাপারে বিরোধ চলছে দীর্ঘদিন ধরে।
আহতদের মধ্যে দুইজনের মাথায় জখম হয়েছে। এদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এ দিকে ঘটনার পরপরই পার্টি অফিস পরিদর্শন করতে যান নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, ফায়ার সার্ভিসসহ পুলিশের লোকজন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনের দ্বিতীয় তলায় নগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনের রেলিংয়ের বড় একটি অংশ ভেঙে পড়েছে নিচে ফুটপাতে টিন শেডের উপর। ভেঙে পড়া অংশগুলো টিন শেডের উপর আটকে রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে চলে গেছেন। ভবনটি একেবারেই জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। ছাদে পানি জমে তা চুইয়ে ঘরের ভেতরে পড়ছে। ভবনের ভেতরে ও বাইরে একাধিক স্থানে পলেস্তারা খসে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। দেয়ালের গায়ে পরগাছা জন্মেছে। ভবনের প্রায় ফ্লোরের জানালা ভাঙা।
এই ব্যাপারে নগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক বলেন, বিকালে হঠাৎ আমাদের পার্টি অফিসের তামাকুমণ্ডি লেনে ঢুকতে বারান্দার রেলিংয়ের একটি অংশ ভেঙে পড়েছে। দুর্ঘটনার খবর শুনে সাথে সাথে আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক নাছির ভাই (আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন) ঘটনাস্থলে গেছেন। ফায়ার সার্ভিসের লোকজনও গেছেন। তবে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা হয়নি।
এই ব্যাপারে মহানগর আওয়ামী লীগের অফিস সহকারী আমির হোসেন জানান, ফায়ার সার্ভিসের নন্দনকানন স্টেশন থেকে একটি টিম এসেছে। তারা দেখে চলে গেছে। তারা বলেছেন, ভেঙে পড়া অংশগুলো অপসারণ করতে হলে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করতে হবে। এই মুহূর্তে অপসারণের জন্য আমাদের জনবল নেই। আপনারা আগামীকাল বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে মানুষ দিয়ে অপসারণ করে নিবেন। ভেঙে পড়া অংশ টিন শেডের উপর না পড়লে ২০-৩০জন আহত হতো।
দেখে মনে হয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে ভেঙে পড়া অংশ অপসারণ করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বর্তমানে চরম ঝুঁকি নিয়ে এই ভবনের নিচে অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা করছেন।
তামাকুমণ্ডি লেন বনিক সমিতির ব্যবসায়ীরা জানান, এই ভবনটির কারণে আমরা সব সময় আতংকে থাকি। আজকে বন্ধের দিন, লোকজন কম ছিল বলে হতাহত হয়নি। খোলার দিনে এমন ঘটনা ঘটলে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটতো।












