ভিয়েনা কনভেনশন মানলে বিদেশি কূটনীতিবিদরা যে একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে পারেন না, জাপানি রাষ্ট্রদূতকে সেটা মনে করিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে জাপানি দূত ইতো নাওকির এক মন্তব্য ঘিরে আলোচনার মধ্যে তাকে তলব করার কথাও বুধবার জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের অ্যাম্বাসেডরকে ডেকেছিলাম। তাকে যা যা বলা দরকার, আমরা বলেছি। খবর বিডিনিউজের।
গত সোমবার ঢাকায় সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করেন ইতো নাওকি। অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি শুনেছি পুলিশ কর্মকর্তারা আগের রাতে ব্যালট বক্স ভর্তি করেছেন। অন্য কোনো দেশে
এমন দৃষ্টান্তের কথা শুনিনি। এভাবে ব্যালট বাঙ ভর্তির ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে। এখানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দরকার, এটাই আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করি।
রাজনৈতিক অঙ্গনে ওই বক্তব্য নিয়ে আলোচনার মধ্যে মঙ্গলবার রাষ্ট্রদূত নাওকিকে তলব করা হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তার কাছে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন জাপান সফর নিয়েও আলোচনা হয় তাদের মধ্যে। আগামী ২৯ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর জাপান সফরের কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
রাষ্ট্রদূতকে ডেকে ঠিক কী বলা হয়েছে, ফেসবুক পোস্টে তার বিস্তারিত বলেননি প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তবে ভিয়েনা কনভেনশনের একটি ধারা ফেসবুক পোস্টে তুলে ধরে ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচারের বিষয়’ কূটনীতিকদের মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। যদি আপনাদের কেউ ভুলে গিয়ে থাকেন : ১৯৬১ সালের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেশনের ৪১ ধারার অনুচ্ছেদ ১ কূটনীতিবিদদের গ্রহণকারী দেশের আইন ও বিধিবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর বিষয় স্মরণ করিয়ে দেয় এবং ওই জাতির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জড়িত হওয়া থেকে সুস্পষ্টভাবে বিরত থাকতে বলে।
ভিয়েনা কনভেশনের ৪১ ধারায় বলা হয়েছে, যারা (কূটনৈতিক) দায়মুক্তি ও সুবিধা ভোগ করে, তাদের দায়িত্ব হচ্ছে গ্রহণকারী দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। ওই রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করাও তাদের দায়িত্ব। বিষয়টি নিয়ে আর বিশদে না দিয়ে শাহরিয়ার আলম লিখেছেন, সবকিছু বিস্তারিত গণমাধ্যমে বলার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। তাই এই বিষয়ে কোনো গণমাধ্যমে আমরা আর কোনো বক্তব্য দিতে চাই না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক আরও গভীর হবে আসন্ন প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের মধ্যে দিয়ে এই প্রত্যাশায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই সফর বাংলাদেশের এবং জাপানের সাধারণ মানুষের উপকারে আসবে বলে আশা করি।












