বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের জন্য নতুন ভিসা দেওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত ‘সাময়িক’ বলে জানিয়েছে ঢাকায় ওমান দূতাবাস। গতকাল বৃহস্পতিবার দূতাবাসের জরুরি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, এ সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই রাজনৈতিক গতি–প্রকৃতির নয়। এদিকে এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, দেশটি খুব শিগগির এটা খুলে দেবেন। কিন্তু খোলার আগ পর্যন্ত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ভিসা পেয়েছেন তারা যেতে পারবেন। খবর বিডিনিউজের।
দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা প্রদান স্থগিত সংক্রান্ত রয়াল ওমান পুলিশের ঘোষণার বিষয়বস্তুর মূল প্রতিপাদ্য ওমানে বিদেশি শ্রমবাজার সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরিচালনা করা ‘সার্বিক সমীক্ষা পর্যালোচনার’ অংশবিশেষ। দূতাবাস বলেছে, ভিসা প্রদান স্থগিত করার সিদ্ধান্তটি অন্যান্য দেশের নাগরিকদের ক্ষেত্রেও সমভাবে কার্যকর করা হয়েছে এবং সিদ্ধান্তটি প্রকৃতভাবে একটি সাময়িক পদক্ষেপ।
চলমান পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে পুনরায় ভিসা দেওয়ার কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। মঙ্গলবার এক ঘোষণায় ওমান পুলিশ বলেছে, বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য যে কোনো ধরনের ভিসা দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। তবে এ ঘোষণায় কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে ঢাকায় ওমান দূতাবাস বৃহস্পতিবার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার।
এক প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী এ বিষয়ে ‘প্রতিশ্রুতি’ পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেছেন, অসুবিধে নেই। এটা চিরস্থায়ী না। দক্ষিণ এশিয়ার আরেকটি দেশকে করা হয়েছিল, মাস দুয়েক পরে উঠিয়ে নিয়েছেন।
ওমানে সাড়ে সাত লাখ বিদেশি কর্মীদের অর্ধেকই বাংলাদেশি– এমন তথ্য দিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, যে কোনো বাজারে সীমাহীন চাহিদা থাকে না। যে চাহিদা নিয়ে কর্মীরা গেছেন তার কিছু ব্যত্যয় হয়েছে। ওখানে কিছু অপপ্রয়োগ হয়েছে। মধ্যস্বত্বভোগীরা অপব্যবহার করেছে। ভবিষ্যতে যারা যাবেন তাদের জন্য বার্তা থাকবে অবশ্যই কাগজপত্র যাচাই–বাছাই করে চাকুরি নিশ্চিত করে যাবেন। কূটনীতিকদের ভিসা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে ওমানের ভিসা স্থগিত প্রক্রিয়ায় থাকছে না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি কোনো ব্যবসায়ীর মনে হচ্ছে, তাদের যেতে সমস্যা হচ্ছে–তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, বিষয়টা খুব আকস্মিক। আমাদের দূতাবাসকেও আগে জানায়নি। হঠাৎ করেই ঘোষণাটা এসেছে। তবে এসব ব্যাপারে আগেও অনেক দেশকে দিয়েছে, কদিন পরে ভিসা দেওয়া শুরু করে। তিনি বলেন, গত বছর ১ লাখ বেশির বেশি কর্মী গেছে। এদের অনেক আদম ব্যবসায়ী পাঠিয়ে দিয়েছে। ঠিকমতো চাকুরির ব্যবস্থা করে নাই। এসব দুর্ঘটনার কারণে হয়তো ওরা বন্ধ করেছে। এটা চিরস্থায়ী না। আমাদের ওদের সঙ্গে আলোচনা করছি। বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে বিদেশে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, টাকা খরচ করে বিদেশ গিয়ে কাজ না পাওয়া অগ্রহণযোগ্য।