ভাসুর ভাবী ননদের পিটুনিতে গৃহবধূর মৃত্যু, অভিযোগ স্বামীর

চকরিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ১১ আগস্ট, ২০২৫ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ভাসুরভাবী ও ননদের পিটুনিতে গতকাল রোববার সকালে এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দিতে ভাসুরসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন খোদ ওই গৃহবধূর স্বামী আজিম উদ্দিন। গৃহবধূর নাম সানজিদা আক্তার (১৯)

চকরিয়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের ভাঙ্গারমুখের কোনার পাড়া এলাকার নিজ বাড়িতে গতকাল রবিবার সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পিটুনির পর অবস্থা বেগতিক দেখে ওই গৃহবধূর লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পর পরই গৃহবধূর চার ভাসুর, তাদের স্ত্রী ও ননদেরা বাড়িতে তালা দিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে পড়েন।

স্বামীর অভিযোগ দ্বিতীয় দফায় পিটুনির পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ওই গৃহবধূ। স্বামী আজিম উদ্দিন ভিডিও বক্তব্যে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেনগত শনিবার সকালে তাদের দুই বছরের সন্তান সিফাত মিয়া উঠানে মলত্যাগ করে। এ নিয়ে সানজিদার সঙ্গে বড় ভাই হেলাল উদ্দিন ও তার স্ত্রী মিনা আক্তারের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বড় ভাই হেলাল উদ্দিন, শাহাব উদ্দিন, আলাউদ্দিন, সালাহ উদ্দিন এবং ভাবী ও বোন জেসমিন মিলে লাঠিসোটা দিয়ে তাদের দুজনকে (স্বামীস্ত্রী) মারধর করেন। এরপরও তা তারা মেনে নেন।

আজিম উদ্দিন বলেন, রবিবার সকালে কাজে যাওয়ার পর স্ত্রী ফোন করে জানায়, তারা মিলে তাকে মারধরের চেষ্টা করছে এবং ধারালো কিরিচ দিয়ে বসতঘরে আঘাত করছে। এরপর ফোন কেটে যায়। পরে জানতে পারি স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি স্ত্রী আর বেঁচে নেই। আমি আমার স্ত্রীর হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।

নিহতের মা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, মেয়ে ফোনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে মারছে। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি। হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের মরদেহ দেখতে পান তিনি। সানজিদার বাবা মাহমুদুল করিম বলেন, তিন বছর আগে মেয়ের বিয়ে হয়। তার দুই বছরের ছেলে সন্তান আছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলেছে। আমি মামলা করব।

এদিকে খবর পেয়ে চকরিয়া থানার পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। লাশ হস্তান্তরের পর পেকুয়ার মেহেরনামা আবাসন এলাকায় দাফন করা হয়। ঘটনার পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মগোপনে চলে গেছে।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শুনেছি ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা পুলিশের চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিত দাস বলেন, গৃহবধূর স্বামীর দাবি অনুযায়ী এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিসেম্বরের মধ্যে এনসিটি, লালদিয়ার চর ও বে টার্মিনালে অপারেটর নিয়োগ
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম জেলায় মোট ভোটার ৬৮ লাখ ৩৫ হাজার