যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে বাংলাদেশি স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন (বিএসএইউসি)। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) নিউজিল্যান্ডের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ক্যান্টারবুরি ইউনিভার্সিটি, ক্রাইস্টচার্চ লাইব্রেরি ভবনের নিচতলায় নানা আয়োজনে পালিত হয় দিবসটি।
এসোসিয়েশনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহাম্মদ রাফি বিশ্বাস এই বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন। আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল নিজস্ব মাতৃভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে একটি বহুসংস্কৃতিক ও অবিচ্ছেদ্য সমাজ গঠন করা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাতের জন্য একটি বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন কর্মসূচির প্রথম অংশে ছিল বিএসএইউসি সদস্য নাশরাহ নাহরীনের তথ্যবহুল স্বাগত বক্তব্য। তিনি দিনটির ঐতিহাসিক পটভূমি তুলে ধরার মাধ্যমে বাঙালিদের জীবনে দিবসটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন।
তিনি বলেন, দিনটি যেমন আমাদের কাছে ভাষা শহীদদের হারানোর জন্য বেদনার, একই সাথে মাতৃভাষার সম্মান ফিরে পাবার জন্য আনন্দের ও গর্বের।
অনুষ্ঠনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএসএইউসি এর প্রাক্তন সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সৈয়দ নিজার। তিনি বাংলা ভাষার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংখ্যা লঘুদের মাতৃভাষা সমূহ সংরক্ষণের জন্য সরকার এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
আলোচনা শেষে ছিল দেশাত্মবোধক গান, দলীয় সংগীত, ভাষার গান, একক এবং দৈত সংগীত। সমবেত কণ্ঠে- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে সাংকৃতিক অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
মো. আওরঙ্গজেবের কণ্ঠে গাওয়া, ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন করলি রে বাঙালি’ গানটি শ্রোতাদের মধ্যে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের চেতনা পুনরুজ্জীবিত করে।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও গান পরিবেশন করেন ড. স্বর্ণালী অতসী তিসি, টপ্পা, মোনালি আলম, শম্পা পালমা, অর্ণব জাহিদ ও রাফি বিশ্বাস।
আন্তর্জাতিক শ্রোতাদের অংশগ্রহণ এবং তাদের বেশ কয়েকটি মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা অনুষ্ঠানটিকে সাফল্যমন্ডিত করে। এতে একটি পোলিশ ভাষার গান পরিবেশন করেন পোলিশ বংশোদ্ভূত ক্যান্টারবুরি ইউনিভার্সিটির একজন পিএইচডি শিক্ষার্থী ড্যানিয়েল বজনিউইচ্য।
আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে নাদাইন বর্মন মাওরি ভাষায় তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।
পরিশেষে, বিএসএইউসির পক্ষে, বিএসএইউসির সভাপতি ও সিনিয়র প্রভাষক ড. মেজবাহউদ্দিন চৌধুরী অনুষ্ঠানটি পরিচালনা ও পরিকল্পনা করার জন্য সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহাম্মদ রাফি বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাগর হোসেনসহ আয়োজক কমিটির সকল সদস্যদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।