ভারতের বিপক্ষে চেন্নাই টেস্টে ভরাডুবি হয়েছে বাংলাদেশের। রেকর্ড ২৮০ রানে হেরেছে নাজমুল হোসেন শান্তরা। এবার কানপুরে সিরিজের শেষ টেস্টে ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় কাল শুক্রবার মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তার আগে দল নিয়ে চিন্তার কথা জানান প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। বাংলাদেশ দল নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ জানাতে গিয়ে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘ভালো শুরুর পর ওরা আউট হয়ে যাচ্ছে এটা নিয়ে আমরা একটু চিন্তিত। তারা ভালো করতে মুখিয়ে আছে। গত ম্যাচে আমরা আমাদের মেধা ও সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি।’ হাথুরুসিংহের ভাষ্য, ‘ভালো শুরু পেলে ইনিংস বড় করতে হবে। তা হচ্ছে না, এটাই দুশ্চিন্তার বিষয়। টেস্ট ক্রিকেটে কেউ ৩০ বল খেলে ফেললে উইকেটে থিতু হওয়া জরুরি। কীভাবে প্রতিরোধ গড়তে হবে ভারতের এই দল তা ভালো করেই জানে। তাই আমাদের দীর্ঘ সময় ধরে ভালো ব্যাট করে যেতে হবে। নতুন বল নিয়ে ওপেনাররা আমাদের চেয়েও বেশি ভাবছে। তারা ভালো শেপে আছে। আশা করছি এবার আরও ভালো করবে। প্রত্যেক ব্যাটারই এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছে।’
চেন্নাইয়ের উইকেট প্রসঙ্গে টাইগারদের প্রধান কোচ বলেন, ‘পেস বান্ধব উইকেট দেখে আমি অবাক হইনি, কারণ জানি তারা কেন এমন করছে। আমরাও আমাদের দেশে খেলা হলে প্রতিপক্ষ অনুযায়ী স্পিন কন্ডিশন সাজাই। প্রতিপক্ষের শক্তি, নিজেদের শক্তি, প্রতিপক্ষের দুর্বলতা এসবের ওপর নির্ভর করে উইকেট তৈরি করা হয়। উপমহাদেশ বলে শুধু স্পিন নয়, চাইলে পেস নির্ভর উইকেটও তৈরি করা যায়।’
চেন্নাইয়ের পর দ্বিতীয় টেস্ট কানপুরের উইকেট কেমন হবে তা নিয়ে এখনও রয়েছে সংশয়। তবে টাইগারদের প্রথম চার ব্যাটার বাঁহাতি হওয়ায় উঠেছে প্রশ্ন। এ নিয়ে হাথুরু বলেন, ‘পিচ একটু দেখেছি। মাঠকর্মীরা দুটি পিচ তৈরি করছে। কোনটা বেছে নেওয়া হবে জানি না। কাল এসে হয়ত দেখতে হবে। আমাদের মনে হয় এটাই আমাদের সেরা কম্বিনেশন, হোক ডানহাতি বা বাঁহাতি। একাদশে পরিবর্তন নির্ভর করছে কাল(আজ) উইকেট দেখার ওপর।’
এদিকে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে একের পর এক ধোঁয়াশা যেন কাটছেই না। শুরুতে রাজনৈতিক কারণে তাকে নিয়ে আলাপ ছিল কিছুদিন। এখন আলোচনায় তার আঙুলের চোট। চেন্নাই টেস্টের পর ধারাভাষ্যকক্ষে মুরালি কার্তিক জানান, অস্ত্রোপচার হয়েছে সাকিবের আঙুলে। এজন্য বোলিংয়েও নাকি তার অসুবিধা হচ্ছে। নির্বাচক হান্নান সরকারও সাকিবকে পর্যবেক্ষণের কথা জানান। এরপর থেকে তার খেলা নিয়ে নতুন সংশয় তৈরি হয়। এ নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কাছে।
উত্তরে কানপুর টেস্টের আগের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সাকিবের সম্পর্কে বলব, তাকে নিয়ে এই মুহূর্তে কোনো সংশয় নেই। আমি ফিজিও বা কারো কাছ থেকে কিছু শুনিনি। কাজেই সে খেলার জন্য প্রস্তুত।’ চেন্নাই টেস্টে সাকিবের মাঠের পারফরম্যান্সও খুব একট আশা জাগানিয়া নয়। দুই ইনিংসের কোনোটিতেই উইকেট পাননি। ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে ৩২ ও দ্বিতীয়টিতে ২৫ রান করেন। সাকিবের পারফরম্যান্স নিয়ে অবশ্য চিন্তার কিছু দেখছেন না হাথুরুসিংহে। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু তার পারফরম্যান্স নিয়ে অসন্তুষ্ট নই। কিন্তু সবমিলিয়ে যে পারফরম্যান্স, তাতে হতাশ। আমরা আরও ভালো করতে পারতাম। আমি নিশ্চিত সাকিব নিজেও ভাবছে সে আরও ভালো করতে পারতো। আমরা সবাই জানি তার (সাকিবের) সামর্থ্য কতটা। আমার মনে হয় দ্বিতীয় ইনিংসে খুব ভালো ব্যাট করেছে। সে আরও ভালো করতে পারেনি। তবে সেটি সেরা সময় পেছনে ফেলার কারণে নয়। বরং প্রতিপক্ষের মানের কারণে।