মনুষ্য ও প্রাকৃতিক সৃষ্ট নানা সমস্যায় জর্জরিত চট্টগ্রামের বেশিরভাগ নদী। এর মধ্যে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে অবৈধ দখল, ভরাট ও দূষণ। বিভিন্ন সময়ে অবৈধ দখলদার এবং নদী দূষণে জড়িতদের তালিকা করেছে প্রশাসন। কিন্তু অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ এবং দূষণে জড়িত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে জোর দেয়া হয় না। এতে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য হারাচ্ছে নদীগুলো। এমন পরিস্থিতিতে আজ রোববার চট্টগ্রামসহ সারা দেশে পালিত হবে বিশ্ব নদী দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের সম্প্রদায়ের জলপথ’।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কো–অর্ডিনেটর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া আজাদীকে জানান, এবারের প্রতিপাদ্যে পরিবেশ এবং মানব কল্যাণ উভয়কেই সমর্থন করার জন্য স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সুস্থ নদীগুলোকে রক্ষা এবং ক্ষতিগ্রস্ত নদীগুলোকে পুনরুদ্ধার করার গুরুত্বের ওপর জোর দেয়। এই প্রতিপাদ্যটি আমাদের স্থানীয় পাড়া–মহল্লার মধ্যে নদীর ভূমিকা তুলে ধরে।
জানা গেছে, প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের চতুর্থ রোববার নদী দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশে ২০১০ সাল থেকে রিভারাইন পিপল নামের একটি সংস্থা এ দিবস পালন করে আসছে। তবে ১৯৮০ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্ব নদী দিবস পালন করতে শুরু করে ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। ২০০৫ সালে জাতিসংঘ দিবসটি অনুসমর্থন করে।
এদিকে ২০২৩ সালের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বিভাগে নদী রয়েছে ৬০টি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় নদী আছে ১১টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কর্ণফুলী, হালদা, শঙ্খ ও ইছামতি। নদীগুলোর মধ্যে ‘বাংলার আমাজান’ খ্যাত নদী শঙ্খ ভরাট ও দখলদারের কবলে পড়েছে। ঐতিহ্যবাহী রাঙ্গুনিয়ার ইছামতি নদীও একই সমস্যায় জর্জরিত। দখল ও দূষণের কবলে আছে কর্ণফুলী। দূষণের শিকার হয়েছে হালদাও।
চট্টগ্রাম বিভাগের উল্লেখযোগ্য নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে চান্দখালী, ডলু–টংকাবতী, ফেনী, শ্রীমাই, শিকলবাহা, শিলক, মেঘনা নদী, আরচি, উত্তর আকালিয়া, কাকরী, কাঠালিয়া, কামতা, খিরাই, কালা ডুমুর, ক্ষিরাই, পুংগাজুর কোদালিয়া, গুণী, গোঙর, গোবিন্দপুর, গোমতী, ঘুংঘুর, চর কুমারিয়া, ছোট ফেনী, ডাকাতিয়া, তুলশিঘাটা, ধনাগোদা, পাগলী, পুরান বাতাকান্দি, মধুকুপি, মধুমতি, শুভানগর, সরস্বতী, সিদ্ধেশ্বরী, সোনাইছড়ি, তিতাস, পুটিয়া, বড়ইচারা, বিজনা, বুড়ি, মধ্যগঙ্গা, লাখু, হরল, সিংড়া, কহুয়া, মুহুরী, সিলোনিয়া, হাতিয়া নদ, গজারিয়া, ভুলুয়া, কুহেলিয়া ও উখিয়া–টেকনাফের নাফ নদী, বাঁকখালী, চেঙ্গী, মাইনী ও ফেনী নদী, ইছামতি, রাইংখিয়ং, কাচালং ও মাতামুহুরী।