জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কোটায় পরিচালক পদে ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এটি জানানো হয়। গঠনতন্ত্র অনুসারে, এনএসসি কোটায় পরিচালক পদ হারানোয় আপনা–আপনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির পদও হারান ফারুক। ফারুকের জায়গায় নতুন সভাপতি হলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। গতকাল শুক্রবার বিকেলের বোর্ড সভায় বুলবুলকে সভাপতি ঘোষণা করা হয়। ক্রিকেট ভক্তদের কৌতূহল আছে, বিসিবি সভাপতি হয়ে কী করতে চান বুলবুল? তার লক্ষ্য উদ্দেশ্য কী এবং অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতির দায়িত্ব পালন শেষে আগামী অক্টোবরের নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা, ইত্যাদি বিষয়ে জানার। গত বৃহস্পতিবার ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ক্রিকবাজ’কে বুলবুল বলেন আমার প্রধান লক্ষ্য হলো একটি স্বচ্ছ নির্বাচন দেওয়া এবং সেরা ক্রিকেট বোর্ড গঠন করা। এই পর্যন্তই। আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ নেই।
আমি সবসময় ক্রিকেট উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। এর আগে কখনও এই ধরণের দায়িত্বে কাজ করার সুযোগ পাইনি। এবারই প্রথম আমি একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেয়েছি। আর আমি না বলিনি। এতটুকুই। সরকারের কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়ে কাজের ইচ্ছে প্রকাশ করেন বুলবুল। তবে দীর্ঘমেয়াদে সভাপতি পদে থাকার চান না জানিয়ে তিনি বলেন যেহেতু সুযোগ এসেছে আমি কাজ করবো। আপাতত নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের ইচ্ছে। নির্বাচনের পর আমাকে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হবে কি না অথবা আমি আইসিসিতে ফিরে যাবো কি না ভবিষ্যতে কী হবে, তা জানি না। তবে আপাতত নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা আমার নেই। আমি দীর্ঘমেয়াদে এই দায়িত্বে থাকার ইচ্ছাও নেই। বিসিবি সভাপতির পদ পাওয়ার আগ পর্যন্ত আইসিসির ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন আমিনুল। সরকারপক্ষ থেকে যোগাযোগ করার পর তিনি আইসিসির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাকে অনির্দিষ্টকালের ছুটি দিতে সম্মত হয়েছে। আইসিসির বার্তা নিয়ে আমিনুল বলেন আইসিসি আমাকে বলেছে আপনি স্বাধীনভাবে বাংলাদেশে যতদিন প্রয়োজন কাজ করতে পারেন। আপনার জন্য দরজা সবসময় খোলা। আমি আইসিসির প্রতি কৃতজ্ঞ। তারা আমাকে এগিয়ে যাওয়ার সবুজ সংকেত দিয়েছে।
গত বছর ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তনের পর বিসিবিতেও পরিবর্তন আনা হয়। সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন পদত্যাগ করেন। আর এনএসসি কোটায় দুই পরিচালক জালাল ইউনুস ও আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববিকে পদত্যাগ করানো হয়। এ দুইজনের পরিবর্তে ফারুক আহমেদ ও নাজমুল আবেদিন ফাহিমকে পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বা এনসসি। ১৯ আগস্ট এই দু’জনকে মনোনয়ন দেয়ার পর পরিচালকদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক আহমেদ। একই প্রক্রিয়ায় এবার সভাপতি হলেন বুলবুল। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বুলবুুল। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানও তিনি। ২০০০ সালে ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে দেশের অভিষেক টেস্টে ১৪৫ রান করেছিলেন বুলবুল। ১৯৮৮ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর ১৩টি টেস্ট ও ৩৯টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। অবসর নেওয়ার পর কোচ ও ম্যাচ রেফারির ভূমিকায় কাজ করেছেন। গত দুই দশকে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) এবং আইসিসির হয়ে কোচিংয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন বুলবুল।