ভালোবেসে বিয়ে, মারধরের শিকার হয়ে মৃত্যু

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৩ মার্চ, ২০২৩ at ৫:৩০ পূর্বাহ্ণ

নিজের জীবন দিয়ে ভালোবাসার চড়া মাশুল দিল আরাফাত হোসেন ইমন (২০)। দুর্বৃত্তদের হামলায় দুই দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে হার মানতে বাধ্য হন তিনি। কে বা কারা তার ওপর হামলা করেছে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা না গেলেও তার পরিবারের ধারণা, ইমনের ভালোবাসার মানুষ আরজুর পরিবার তাদের ভালোবাসা মেনে নিতে পারেনি; তার ওপর দুজনে পালিয়ে বিয়ে করেছে শুনে তারা আরও ক্ষেপে যান।

কিন্তু পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার বলেছেন, আনোয়ারায় মারধরের শিকার পটিয়ার এক যুবকের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনার বিবরণে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত সহকারী উপপরিদর্শক আলাউদ্দিন মজুমদার জানান, আরাফাত হোসেন ইমন (২০) গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টায় আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়ায় ইউনিয়নের ছত্তারহাট এলাকায় হামলার শিকার হন। গতকাল ২ মার্চ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তিনি পটিয়া উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের পাইরুল গ্রামের এমদাদ হোসেন খোকনের ছেলে।

ইমনের খালা কুলসুমা জানান, পটিয়া আশিয়া ইউনিয়নের আরজু নামে এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ইমনের। তিন মাস আগে তারা দুজন গোপনে বিয়ে করে। গত সপ্তাহে মেয়েটি বাপের বাড়ি থেকে ছেলের বাড়িতে চলে আসে। পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে। এমনকি মেয়ের মাসহ পরিবারের সদস্যরা ইমনের বাড়ি এসে আরজুকে রীতিমতো জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। আরজু সেইসময় জানিয়েছিল, বাবার বাড়িতে গেলে তাকে মেরে ফেলা হবে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যরা এসে মেয়েকে পরিবারের হাতে তুলে দেন। কুলসুমা আরও বলেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে আনোয়ারা উপজেলার ছত্তারহাট এলাকায় ইমনকে দেখতে পেয়ে তার ওপর হামলা করে দুর্বৃত্তরা। মুর্মূষু অবস্থায় সেখানেই পড়ে ছিল ইমন। রাত দশটার দিকে পরিবারের সদস্যরা এ খবর পায়। ইমনের বাবা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ করতে গিয়ে দেখতে পান তার ছেলে সেখানে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। সেখানেই বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয় ইমনের।

স্থানীয়রা ইমনের পরিবারের কাছে বলেছে, ২৮ ফেব্রুয়ারি ইমন ও আরজুকে তারা কানুশাহ মাজারে যেতে দেখেছেন। হঠাৎ করে সিএনজি টেঙিযোগে সেখানে ১০১২ জন লোক আসে। তারা মাজার মসজিদের মাইকে ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে ঘোষণা দেয়। তখন স্থানীয়রা ইমনকে ধাওয়া দিয়ে তিন কিলোমিটার দূরে ছত্তারহাট মোড়ে নিয়ে মারধর করে। একপর্যায়ে ছুরিকাঘাত করে ফেলে যায়। এরপর স্থানীয় কয়েকজন ওই তরুণকে নিয়ে যায়। কিন্তু পরে তরুণীটির আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচার বছরে ভোটার বেড়েছে পৌনে ৯ লাখ
পরবর্তী নিবন্ধসঙ্কট রয়ে গেছে, রাজনৈতিক ঐকমত্য জরুরি : সিইসি