হাতের ওপর হাত রাখাটা সহজ, সারাজীবনের সুখ–দুঃখ, ভালোর সাথে মন্দগুলোকে পাশ কাটিয়ে, সরিয়ে দিয়ে, ভুলিয়ে দিয়ে, এক আকাশের মতো বিশালতা নিয়ে উড়ন্ত মেঘের মতো উড়িয়ে দিয়ে, বরষার জলে ভিজে, তপ্ত রোদে পুড়ে, শরতের আকাশে নীলাদ্রি আভায় নীলাবতী হয়ে সাদাতুলো মেঘের সাথী হতে পারলেই ভালোবাসা একেবারে পোক্ত হয়ে যায়। ঝড়ের বেগে আসা দুঃখগুলো শুকনো পাতায় ভর করে আসে, চোখে–মুখে ধুলোপড়া সময় কোনোকিছু স্বচ্ছ দেখাও যায় না। ঝড় থামবে কিনা, বাতাসের সাথে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির জলে দমবন্ধ অভিমান একটু হলেও মিটে যায়। এরপর ঝড়ো হাওয়ায় বৃষ্টি অঝোরে কাঁদিয়ে দিয়ে যায় জমানো সকল হাহুতাশ। এরপর নির্মল শীতল আকাশে একটুকরো রোদের উঁকিঝুকি আশার আলো ছড়িয়ে দেয়। হয়তো ভালোবাসা এমনই, মানিয়ে নিতে হয়। যতোটুকু পারা যায়, পারতে হয়,পারলেই তো জিতে যায় অনেক কিছু। সুন্দর থেকেও যেন সৌন্দর্য বাড়ে। থাকুক না কিছু অপূর্ণতা সব পেলে জীবন সুন্দর না হয়েও থাকে না। বরং কিছু অপূর্ণতায় জীবন সার্থক না হয়ে পারে না। একটা সময় জীবনের সব হিসেব মিলাতে মিলাতে ঠিক মিলে যায়। জীবন চিন্তায় সুন্দর। সম্পর্ক বোঝাপড়ার মাঝেই টিকে থাকে। সহনীয় মাত্রায় থাকলেই হয়। হয়তো বিপরীতমুখী হলেও হতে পারে। ভালোবাসা খুব বেশি গাঢ় হতে নেই ফিকে হওয়ায় আশঙ্কা থেকে যায়, যদি তা লাল টুকটুকে রঙ যদি হয়। জলের ছোঁয়া পেলেই লাল রঙ যেন দুরন্ত হয়ে যেতে চায়। ভালোবাসা খুব বেশি হালকা হতে নেই গিট খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। ভালোবাসা হয়তো মধ্যমেই নিরাপদ। না কম না বেশি। বাড়াবাড়ি নেই, কমাকমি নেই। চাইলে কমানো যায়, চাইলে বাড়ানো যায়। এই এক সুবিধা থেকেই যায়।
সাদামাটাভাবে যে ভালোবাসাগুলো, ভালো রাখতে হয় আগলে রাখতে হয়, রক্ষা করতে হয় সেখানে কখনো একফোঁটা লাল রঙের ছোঁয়া অসম্ভব সুন্দর লাগে,অথবা নীল রঙা কষ্টের রঙে ও শরতের মতোই সুন্দর। তার সাথে বন্ধুত্বের হলুদ রঙও যদি দেয়া যায় ঢের ভালো। ভালোবাসা হোক রঙধনুর মতো। সাদা, লাল, নীল হলুদ কখনো পাগলামি ভরা যৌবনের মতো সুন্দর আসমানী রঙে ঠাসা।
কিছু পাওয়া, অজগ্র অজুহাতের আবদার, অভিযোগ অভিমানে আবারও ভালোবাসতে চাওয়া। ভালোবাসা ভালোরাখাতেই হোক পরিপূর্ণ। যুগ যুগ ধরে রঙধনুর মতো চিরকাঙ্ক্ষিত সুন্দর। রোদ বৃষ্টির মতো সুখদুখমাখা পাশাপাশি, ভালোবাসার বন্ধন।