ভেবেছিলাম তোমায় ভীষণ করে ভালোবাসব।
আতশ বাজির মতন তোমায় ভালো বেসে বেসে
বুকের ভেতর থেকে আওয়াজ তুলতে তুলতে
মিলিয়ে যাব শূন্যে।
ভেবেছিলাম
মাতালের মদিরার মত ভালোবাসবো তোমায়।
স্বচ্ছ কাচের গেলাসে ভরে
মুঠোয় পুরে রাখব ঠিক বুকের কাছটায়।
কিছুক্ষণ পর পর ঠোঁট ছুঁইয়ে দেব চুমুকে চুমুকে
আর শীতের কুয়াশার মত বুঁদ হয়ে থাকব
তোমার সমস্ত সত্তায়।
ভেবেছিলাম কলমের মত
কালো কলঙ্ক করে আমার অস্তিত্ব জুড়ে
পুরে রাখব তোমায়।
আমার ভাষা হয়ে তুমি
সৃষ্টি করবে প্রেমের কাব্য।
ভেবেছিলাম দুঃখের বৃষ্টি হব না।
কিন্তু প্রেমের মত সুখের তুষার হব।
তুমুল ঝরে পড়ব আর
জমিয়ে হিম করে দেব দেউলিয়া বাতাসদের।
কিন্তু সে সব কিচ্ছু হল না।
মালীর বাগানে চাষের ফুল হয়ে ফুটে গেল
আমার সমস্ত ভালোবাসা।
মোড়ের দোকানগুলোতে বাহারি
হয়ে সেজে উঠল,
আমি না চাইতেই!
ঠোঙায় ঠোঙায়, লহরে লহরে বিক্রি হয়ে গেল।
প্রয়োজন শেষে ফুরিয়ে গেল নিমিষেই।
কিছু কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঝরে গেল রাস্তায়,
ড্রেনে আর পথের ফাটলে।
লোকেরা তাদের মাড়িয়ে যেতে ভুল করল না।
আমি জানলাম, স্বপ্ন এবং ভালোবাসা
একই গলিতে থাকে না। অলিন্দ আর নিলয়ের
দুটো আলাদা গলিতে তারা আলাদা থাকে।
তাদের কখনো হঠাৎ দেখা হয় বিজলীর মত!
অথবা তারা অধরা, অদেখা বিস্ময় হয়ে
রয়ে যায় পরষ্পরের কাছে।
তুমি আমার সেই হঠাৎ দেখা বিজলী!
যার বজ্র স্পর্শ আমি পাইনি।
তুমি আমার সেই অধরা,অদেখা বিস্ময়!
যার দূরত্ব হয়ত এক মহাকাশ।
যে অগুনিত দূরত্বকে ভুলতে চেয়ে,
আজকাল আমি ভালোবাসতেই ভুলে গেছি।
কিন্তু, কেন জানি না?
ডায়েরিটা খুলে বসতেই
চাষের বাগান থেকে চুপিচুপি তুলে রাখা
একটি বিবর্ণ, শুকনো বেলী থেকে
আজও ভোরের শুভ্রতায় ফোটা
সদ্যজাত সুগন্ধ ভেসে আসে।
সেই গন্ধটা, আমার কাছে
পরানের গহীন ভিতর,
ভালোবাসার আদিম গন্ধ বলেই মনে
হয় কেন?