ভারী বর্ষণে ডুবল কিছু এলাকা

নগরীর বিভিন্ন জায়গায় বাসা-বাড়ি ও দোকানপাটে ঢুকেছে পানি, রাস্তাঘাটে দুর্ভোগে পড়তে হয় পথচারীদের, বৃষ্টি থামার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে বেশিরভাগ এলাকায় পানি নেমে যায়, মতিঝর্ণায় দুটি ঘরের ছাদে ভেঙে পড়েছে গাছ, আজও বৃষ্টির সম্ভাবনা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৯ জুলাই, ২০২৫ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

ভারী বৃষ্টিতে গতকাল সোমবার নগরের বেশ কিছু নিচু অঞ্চলে জলাবদ্ধতা হয়েছে। কয়েক জায়গায় হাঁটু সমান পানি জমে যায়। কাতালগঞ্জে দেখা গেছে কোমরসমান পানি। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি ঢুকে যায়। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ হয় পথচারীদের। এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানমুখী ও কর্মস্থলে যাওয়া লোকজনের ভোগান্তি হয়েছে বেশি। অবশ্য বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে বেশিরভাগ এলাকার পানি নেমে যায় বলে জানান স্থানীয়রা। তবে বৃষ্টির অজুহাতে সিএনজি ও রিকশাচালকরা মনগড়া ভাড়া আদায় করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গতকাল বিকেল ৩টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নগরে ৫৫ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। এছাড়া গতকাল সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আমবাগান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। এ কেন্দ্রে বেলা ১২টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড হয়েছে ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত।

এদিকে গতকাল সকালের নগরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে দেখা গেছে, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, পাঁচলাইশ, প্রবর্তক মোড়, জিইসি, মুরাদপুর, একে খান গেইট, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, তিন পোলের মাথা, রেয়াজুদ্দিন বাজার, পাঠানটুলী, আতুরার ডিপো, হালিশহর, হেমসেন লেন, জুবিলি রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়। কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকায় নৌকা চলতে দেখা গেছে। রহিম নামে এক পথচারী জানান, অল্প বৃষ্টি হলেও কাতালগঞ্জে জলাবদ্ধতা হয়ে যায়। হিজরা খালের সংস্কার না করায় এ দুর্ভোগ হচ্ছে বলে জানান তিনি। এদিকে সকালে রেয়াজুদ্দিন বাজারের কাঁচাবাজার ও কাপড়ের গলিতে পানি জমে যায় বলে জানা গছে। গোলাম রসুল মার্কেটের নিচতলায়ও পানি ঢুকে যায় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

মুরাদপুরেও স্বল্প সময়ের জন্য জলজট হয়েছে। মনজু নামে এক পথচারী বলেন, পানি উঠলেও দ্রুত নেমে গেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার জলাবদ্ধতা কম হয়েছে মুরাদপুরে। বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই পানি নেমে গেছে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নিয়াজ মোহাম্মদ খান বলেন, পাঠানটুলীতে বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে যাওয়ায় লোকজনের দুর্ভোগ হয়েছে। কাপাসগোলার বাসিন্দা শাহেদ বলেন, ভারি বৃষ্টি হলেই আমাদের এলাকা ডুবে যায়।

শাকিল নামে এক পথচারী জানান, বৃষ্টিতে ভিজে হাঁটুপানি মাড়িয়ে কর্মস্থলে গেছি। রাস্তায় যানবাহনও কম ছিল। রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুই চালকই বেশি ভাড়া দাবি করেছে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান জানান, আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ও কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রামের পাহাড়ী এলাকার কোথাও কোথাও পাহাড় ধসের আশংকা রয়েছে। একইসাথে ভারী বর্ষণজনিত কারণে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে লালখান বাজার ওয়ার্ডের মতিঝর্ণা ১৩ নম্বর গলিতে গতকাল পাহাড় ধস হয়েছে। এ সময় দুটি ঘরের ছাদে গাছ ভেঙে পড়েছে। তবে এর আগে ওই পরিবারগুলোর লোকজনকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ায় কেউ হতাহত হননি।

বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইপসার কর্মকর্তা সানাজিদা আকতার আজাদীকে জানান, সিটি কর্পোরেশন, ইপসা ভলেনিটয়ার ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ইভাকুয়েশন করার কারণে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকোনো দেশের দিকে আমরা তাকিয়ে থাকি না : ফখরুল
পরবর্তী নিবন্ধব্যাংক মার্জ সমস্যার সমাধান নয় বরং আরেকটি সংকট