ভারত থেকে কেনা চালের প্রথম চালানটি আগামীকাল চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছবে। প্রথম জাহাজটিতে ২৪ হাজার ৬৯০ টন বস্তাভর্তি সেদ্ধ চাল রয়েছে। ভারত থেকে প্রথম দফায় ৫২ হাজার টন চাল আসবে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে ভারত, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার থেকে সাড়ে ৩ লাখ টন চাল চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। এর বাইরে পাকিস্তান থেকেও ১ লাখ টন চাল আমদানির কথাবার্তা হচ্ছে। আমদানিকৃত চাল দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রে জানা যায়, দেশে খাদ্যশস্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। গতকালের হিসাব অনুযায়ী, সরকারি গুদামে ৭ লাখ ৫৪ হাজার ৮৯২ টন চাল, ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৫৬ টন গম এবং ৪ হাজার ৪২০ টন ধান মিলে সর্বমোট ১১ লাখ ৭৮ হাজার ১৮৬ টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। এটি সরকারি গুদামের মজুদ। এর বাইরে চালের মকাম, দোকান, মানুষের বাসাবাড়িতে প্রচুর চালের মজুদ রয়েছে।
খাদ্যশস্যের মজুদ পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক এবং তা দেশের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট উল্লেখ করে খাদ্য বিভাগের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা বলেন, চালের বাজার কিছুটা অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। দেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮০ হাজার টন চালের চাহিদা রয়েছে। বিপুল পরিমাণ চাল দেশে উৎপাদিত হয়। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকলেও বাজার পরিস্থিতি যাতে অস্থিতিশীল না হয় সেজন্য সরকার সবসময় গুদামে বাড়তি মজুদ রাখে। শুধু বাজার পরিস্থিতি নয়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও বাড়তি এই মজুদ জরুরি।
বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সরকার ৫ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে প্রথম দফায় ভারত থেকে ৫০ হাজার টন (প্লাস মাইনাস ৫ পারসেন্ট) চাল আমদানি করা হচ্ছে। প্রথম চালানের চাল নিয়ে ভারতের কাকিনাডা বন্দর থেকে এমভি তানাইস ড্রিম নামে একটি জাহাজ চট্টগ্রামের পথে রয়েছে। আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যায় জাহাজটির চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছার কথা। পরদিনই জাহাজটিকে বন্দরে বার্থিং দিয়ে চাল খালাস করা হবে। ৫০ হাজার টনের চুক্তি হলেও এই চালানে মোট ৫২ হাজার ৫শ চাল আসবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
এছাড়া কিছুদিনের মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে ১ লাখ টন চাল আসবে। ভিয়েতনামের চালগুলোও ভারত থেকে সরবরাহ করা হবে। এছাড়া মিয়ানমার থেকে আসছে ১ লাখ টন চাল। এসব চাল দেশে পৌঁছলে বাজারে ইতিবাচক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে উল্লেখ করে খাদ্য বিভাগের ওই কর্মকর্তা জানান, পাকিস্তান থেকেও ১ লাখ টন চাল আমদানির কথাবার্তা হচ্ছে।
প্রতি বস্তায় পঞ্চাশ কেজি করে প্রথম চালানের ২৪ হাজার ৬৯০ টন চাল নিয়ে আসা এমভি তানাইস ড্রিম জাহাজটিকে আগামী ২৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থে (জেসিবি) বার্থিং দেওয়া হবে বলে বন্দর সূত্র জানিয়েছে। ভারত থেকে প্রতি টন সেদ্ধ চাল আমদানি করা হচ্ছে ৪৭১ দশমিক ৬০ ডলার দরে। এতে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ২৮২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি চালের দাম পড়েছে ৫৬ টাকা ৫৯ পয়সা।