ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হবে এমন খবরে পাইকারীতে কমছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। দেশীয় পেঁয়াজ চাষীদের বাঁচাতে সরকার গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজের আইপি (আমদানি অনুমতি) বন্ধ করে দেয়। কিন্তু একশ্রেণীর পেঁয়াজের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী কৃষকের কাছ থেকে কম দামে পেঁয়াজ কিনে বেশি দামে আড়তে বিক্রি করছেন। এর ফলে গত দুই মাসের ব্যবধানে ৩০ টাকার পেঁয়াজের দাম সর্বোচ্চ ৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। তবে এখন ভারত থেকে আবার পেঁয়াজের আইপি ইস্যু হতে পারে এন ইঙ্গিত মেলায় খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে গত একদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮–৬০ টাকায়। তবে খুচরা বাজারে সেই পেঁয়াজ এখনো বিক্রি হচ্ছে ৭০–৭৫ টাকায়।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি–১ (তাহেরপুরী), বারি–২ (রবি মৌসুম), বারি–৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের ওপর খুব বড় প্রভাব ফেলে।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে যখন ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ ছিল, তখন দাম ছিল ২৬–৩০ টাকা পর্যন্ত। তবে সরকার দেশের কৃষক বাঁচাতে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করার কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। এখন শোনা যাচ্ছে, সরকার আবার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেবে, তাই এখন পেঁয়াজের দাম নিম্নমুখী। কাজীর দেউরি এলাকার খুচরা বিক্রেতা মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমাাদের দোকানে কয়েক ক্যাটাগরির দেশীয় পেঁয়াজ আছে। এরমধ্যে ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৭০–৭৫ টাকায়। পাইকারী বাজারে এখন দাম কমলেও আমাদের পক্ষে কম দামে বিক্রি সম্ভব নয়। কারণ আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়েছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ব্যবসায়ীরা যে সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করেন, এর প্রমাণ হচ্ছে ভারত থেকে আইপি ইস্যুর হবে এমন খবরে দাম কমে যাওয়া। ভারতীয় পেঁয়াজ আসলে বাজার কমতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে তারা পেঁয়াজের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই বিষয়গুলো প্রশাসনকে তদারকি করত হবে।
উল্লেখ্য, গত ১১ মে সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনৈতিক ও বৈশ্বিক বিষয়াবলিবিষয়ক ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল হেলেনা কনিগের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দেশীয় পেঁয়াজের উৎপাদন পর্যাপ্ত হওয়ার কারণে আমদানি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাজারে তদারকি করা হচ্ছে। যদি পেঁয়াজের দাম বাড়তেই থাকে, তাহলে আমদানি করা হবে