ভারতে মুসলিম, খ্রিস্টানসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর গণ সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। গতকাল রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসএম মাহবুবুল আলম সরকারের এমন উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে দুদিন আগে শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের দেওয়া বক্তব্যও প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ। খবর বিডিনিউজের।
মাহবুবুল বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে, এমন যে–কোনো অসত্য, অতিরঞ্জিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বয়ানকে বাংলাদেশ সরকার স্পষ্ট ভাষায় প্রত্যাখ্যান করছে। অপরদিকে ভারতে হওয়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতে মুসলিম, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ড, গণপিটুনি, নির্বিচারে আটক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ মাসে আপনি যেমন বলেছেন, ভারতের উড়িশায় একজন মুসলিম যুবক জুয়েল রানাকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা ঘটে, বিহারে মোহাম্মদ আজহার হোসেনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড, কেরালায় বাংলাদেশি সন্দেহে এক নিরীহ ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড এবং বিভিন্ন স্থানে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের উপর গণপিটুনি ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
ভারতে বড়দিন উদযাপনের বিভিন্ন আয়োজনে উগ্রপন্থি হিন্দুদের সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, গত সপ্তাহে খ্রিস্টানদের বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে ভারতজুড়ে তাদের প্রতি সংঘটিত গণ সহিংসতার বিষয়েও বাংলাদেশ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এসব ঘটনাকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি এবং আমরা ঘৃণাজনিত অপরাধ এবং লক্ষ্যভিত্তিক সহিংসতা হিসেবে দেখি। আমরা প্রত্যাশা করি, ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করবে এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনবে। আমরা আশা করি যে, প্রত্যেক দেশেরই দায়িত্ব তার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সুরক্ষা ও মর্যাদা দেওয়া এবং প্রত্যেক দেশেরই তা পালন করা উচিত।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গভীর উদ্বেগ জানানোর দুদিন পর এ বক্তব্য এলো বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।
ভারতের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা আমাদের নজরে এসেছে। তার এসব মন্তব্য বাস্তবতার প্রতিফলন করে না।
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে ভুলভাবে উপস্থাপন করা যে–কোনো অসত্য, অতিরঞ্জিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বয়ানকে বাংলাদেশ সরকার স্পষ্ট ভাষায় প্রত্যাখ্যান করছে বলে তুলে ধরেন তিনি।
মাহবুবুল আলম বলেন, ভালো প্রতিবেশী সুলভ সম্পর্ক এবং পারস্পরিক আস্থাকে হেয় করে, এমন বিভ্রান্তিমূলক বয়ান ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে ভারতের বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ।












