সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে সরকারি হিসাবেই শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় তিন লাখ ৫৫ হাজার ৮৩২ জনের দেহে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস পাওয়ার কথা জানিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে আরও ৩ হাজার ৪৩৮ জনের। শনিবার দেশটি একদিনে ৪ লাখের বেশি রোগী শনাক্ত করার কথা জানিয়েছিল; এরপর থেকে ভারতে দৈনিক শনাক্তের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে নেমে আসতে দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। দেশটির সরকারও সংক্রমণের হার খানিকটা কমে এসেছে বলে জানিয়েছে। সরকারি তথ্যে আশার আলো দেখা গেলেও একে দেশটিতে আক্রান্ত-মৃত্যুর প্রকৃত হিসাব মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবের অন্তত ৫ থেকে ১০ গুণ হবে বলেই ধারণা তাদের। খবর বাংলানিউজের।
রাজধানী দিল্লিতে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় যে অঙিজেন সংকট চলছে, তা শিগগিরই মিটবে এমন কোনো ইঙ্গিত মিলছে না। সোমবার শহরটিতে রেকর্ড ৪৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনাবাহিনীর সহায়তা চেয়েছে দিল্লির সরকার। তারা চাইছে, কোভিড চিকিৎসাকেন্দ্র ও নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট পরিচালনার ভার সেনাসদস্যদের হাতে ছেড়ে দিতে। কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লিকে পর্যাপ্ত অঙিজেন সরবরাহ করছে না বলে অভিযোগ করে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এ অভিযোগ অস্বীকার করছে নরেন্দ্র মোদীর প্রশাসন। তাদের ভাষ্য, অঙিজেনের ঘাটতি নেই; কিন্তু পরিবহনজনিত সংকটে তা পাঠানোই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত প্রতিদিন কয়েক হাজার টন অঙিজেন উৎপাদন করে, কিন্তু সরবরাহ নেটওয়ার্কে বিনিয়োগ ঘাটতির কারণে তা দ্রুত পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না।
দিল্লির বাসিন্দাদের জন্য এখন সহজে বহনযোগ্য অঙিজেন ক্যানিস্টার ‘রিফিল’ করা দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। কোভিডে মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় শহরটির মর্গ ও শ্মশানগুলো উপচে পড়ায় শহরটির কর্তৃপক্ষ মৃতদেহ সৎকারের জন্য নতুন নতুন জায়গাও খুঁজছে। ভারত ভ্যাকসিনের সবচেয়ে বড় উৎপাদক দেশ হলেও দেশটিতে টিকার ঘাটতির কথা শোনা যাচ্ছে। জানুয়ারি থেকে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হলেও দেশটি এখন পর্যন্ত তাদের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশের সামান্য বেশি মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দিতে পেরেছে।