ভারতে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের প্রয়োগ স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্ট

| বৃহস্পতিবার , ১২ মে, ২০২২ at ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ

ব্রিটিশ আমলে তৈরি বিতর্কিত রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের প্রয়োগ আটকে দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। সেইসঙ্গে দেশটির সরকারকে এই আইনে আপাতত নতুন কোনো মামলা নথিভুক্ত হওয়া এবং কাউকে গ্রেপ্তার করা থেকেও বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

বিবিসি জানায়, শুধু তাই নয়, বর্তমানে এই আইনে যতগুলো মামলার শুনানি চলছে সবগুলো স্থগিত রাখার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। এই আইনে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা জামিনের আবেদন করতে পারবেন। নরেন্দ্র মোদী সরকারের জন্য এই আদেশ বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের প্রয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলে আসছে। সমালোচকদের মতে, ভিন্নমত দমনে সরকার এই আইনের অপপ্রয়োগ করতে পারে। গ্রেপ্তার হতে পারেন বিরোধীদলের রাজনীতিক, সাংবাদিক বা সমাজকর্মীরা। ভারত সরকার শুরুতে এই আইনের পক্ষে সমর্থন দিলেও গত মঙ্গলবার বলেছে, তারা আইনটি পুনঃপর্যালোচনা করবে।

দৈনিক আনন্দবাজার জানায়, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার বেঞ্চ কেন্দ্রের কাছে জানতে চায়, যত দিন রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের পুনর্বিবেচনা চলছে, তত দিন এই আইনের আওতায় হওয়া মামলা স্থগিত রাখা যায় কিনা? পাশাপাশি আদালত কেন্দ্রের কাছে এটাও জানতে চায়, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলোকে এই আইন প্রয়োগ করে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত রাখতে পারবে কিনা?

উত্তরে গতকাল বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টকে বলে, তারা রাজ্যগুলোকে এটা বলতে পারবে যে, পুলিশ সুপার বা তার চেয়ে উঁচু পদমর্যাদার কোনো কর্মকর্তাই কেবল রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করতে পারবেন। কেন্দ্র সরকারের উত্তর পাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট বুধবার সাফ জানিয়ে দেয়, যত দিন না রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের পুনর্বিবেচনা শেষ হচ্ছে, ততদিন এই আইনের প্রয়োগ স্থগিত থাকবে এবং এই আইনের বলে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।

স্বাধীনতার পর ১৯৬২ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রদ্রোহ আইন প্রয়োগের উপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করে। কিন্তু ভারতের বিভিন্ন সরকার নিজেদের প্রয়োজনে এই আইনের ব্যবহার করে যাচ্ছে। বিশেষ করে যারা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলছে তাদের ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ করতে। ভারতে বিচার পাওয়ার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বছরের পর বছর ধরে ওই সব মামলা চলে।

এদিকে, যাদের বিরুদ্ধে এই আইনে মামলা চলছে তাদের অবশ্যই আদালতে তাদের পাসপোর্ট জমা দিতে হয়, তারা কোনো সরকারি চাকরিতে আবেদন করতে পারে না এবং যখনই ডাকা হয় তখনই আদালতে উপস্থিত থাকতে বাধ্য থাকে। এই আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডই হতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিনামূল্যের চাল নেওয়ার লোক ‘পাওয়া যায় না’ : কৃষিমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধইউসুফ এ্যাপারেলসের মালিক কারাগারে