করোনাভাইরাস মহামারী এরই মধ্যে ভারতে এক লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। দেশটিতে এখনো যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে কোথায় গিয়ে থামবে এ মৃত্যুর মিছিল? এরআগে শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে এক লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে। তৃতীয় দেশ হিসেবে গতকাল শনিবার ভারত বেদনাদায়ক এই মাইলফলকে পৌঁছায়। গতকাল পর্যন্ত ভারতে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মোট ১ লাখ ৮৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট শনাক্ত ৬৪ লাখ ৭৩ হাজার ৫৪৪ জন। খবর বিডিনিউজের।
গত মাসের মাঝামাঝি থেকে দেশটিতে দৈনিক শনাক্ত প্রায় প্রতিদিনই লাখ ছুঁইছুঁই ছিল। সেই তুলনায় নতুন রোগী শনাক্ত কিছুটা হ্রাস পেলেও এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী ভারতেই পাওয়া যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। সংক্রমণের বিস্তার রোধে গত মার্চে নরেন্দ্র মোদী সরকার দেশজুড়ে লকডাউন দিলেও অর্থনীতি বাঁচাতে তা শিথিল করতে হয়েছে। এ সপ্তাহে ভারতের সিনেমা হল খুলে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক টিকেট বিক্রি করা যাবে। মধ্য অক্টোবরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়েও সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এদিকে সমানে শীত আসছে। শীতে পুরো বিশ্বেই মহামারী আবারও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারতে শীতের মৌসুমে লোকজন ভ্রমণে বের হয়। তাছাড়া, সামনে দেশটিতে হিন্দুদের বড় ধর্মীয় উৎসব ‘দিওয়ালি’ আসছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা তাই ওই সময়ে দেশে সংক্রমণের গতি আরো বেড়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন। এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের বায়ো স্ট্যাটিসটিঙ ও এপিডেমিওলজির অধ্যাপক ভ্রমর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘সমপ্রতি ভাইরাস সংক্রমণ রেখা কিছুটা নিচের দিকে নেমেছে। তবে, খুব সম্ভবত এটা সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের চূড়া, আরো ঢেউ আসছে।’ ভারতের মোট জনসংখ্যা ১৩০ কোটির বেশি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখন পর্যন্ত দেশটির মোট জনসংখ্যার ৭ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। তাই এখনো ‘হার্ড ইমিউনিটি’ হতে অনেক বাকি বলে মনে করেন এই অধ্যাপক। তিনি বলেন, এ বছরের শেষ দিকেই মোট শনাক্ত এক কোটি ২০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। যদিও সংক্রমণের গতি অনেকটাই এর বিরুদ্ধে নেওয়া প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার উপর নির্ভর করছে।