গুজরাট দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা বিবিসির তথ্যচিত্র যেন ভারতে না দেখা যায়, তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নিতে টুইটার, ইউটিউবকে নির্দেশ দিয়েছে নয়া দিল্লির সরকার। সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ওই তথ্যচিত্রের কোনো ক্লিপও শেয়ার করা যাবে না, বলেছে তারা। তথ্য প্রযুক্তি আইনের অধীনে জরুরি ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, শনিবার নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে ভারত সরকারের উপদেষ্টা কাঞ্চন গুপ্ত একথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
গুপ্ত জানান, বিবিসি ভারতে ওই তথ্যচিত্রটি না দেখালেও কিছু ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটি আপলোড হয়েছিল। ভারত সরকার পরে তথ্যচিত্রের ভিডিওর সঙ্গে লিংক থাকা অর্ধশতাধিক টুইট ব্লক করে দিতে টুইটারকে নির্দেশ দেয়, ইউটিউবকেও ভিডিওটির যে কোনো আপলোড বন্ধে নির্দেশনা দেওয়া হয়। ইউটিউব ও টুইটার উভয়েই ওই নির্দেশনা মেনে চলছে, বলেছেন তিনি।
২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় মোদী পশ্চিমাঞ্চলীয় ওই রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সেবারের সামপ্রদায়িক দাঙ্গায় সরকারি হিসাবেই এক হাজারের চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, মৃতদের বেশিরভাগই ছিল মুসলিম। দাঙ্গায় প্রকৃত নিহতের সংখ্যা সরকারি সংখ্যার দ্বিগুণের বেশি বলে অনুমান একাধিক মানবাধিকার সংস্থার।
হিন্দু তীর্থযাত্রীবাহী একটি ট্রেনে আগুন ধরে ৫৯ জনের মৃত্যুর পর গুজরাটে ওই দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল। দাঙ্গা রোধে মোদী কার্যকর ব্যবস্থা নেননি, এমনকি নিরাপত্তা বাহিনীকে নিস্ক্রিয় করে রেখেছিলেন বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। বিজেপির এই শীর্ষ নেতা অবশ্য প্রথম থেকেই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
দাঙ্গায় মোদী ও অন্যদের ভূমিকা তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের নিয়োগ দেওয়া বিশেষ তদন্ত দলও ২০১২ সালে দেওয়া তাদের ৫৪১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে গুজরাটের তখনকার মুখ্যমন্ত্রীকে বিচারের আওতায় আনার মতো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মোদী এরপর দলেরও প্রধান হন, তার হাত ধরেই বিজেপি ২০১৪ সালের নির্বাচনে জিতে কেন্দ্রের ক্ষমতায় বসে। নির্বাচনে জিতে তারা ২০১৯ সালে ফের সরকার গড়ে।