বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা, বাংলাদেশ ও ভারতের অভ্যন্তরীণ নৌ প্রটোকলকে আরো কার্যকর করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিদ্যমান প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি) এর আওতায় দেশের ১১টি ‘পোর্টস অব কল’, দুটি এক্সটেন্ডেড ‘পোর্টস অব কল’ এবং ১০টি নৌ প্রটোকল রুটে বিরাজিত সমস্যা চিহ্নিত এবং আরো গতিশীল করতে প্রয়োজনীয় এ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ২০ অক্টোবর থেকে নয়াদিল্লীতে এসব বিষয়ে তিনদিন ব্যাপী সচিব পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল যোগ দেবেন।
সূত্র জানায়, ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বিশাল। দিনে দিনে এ ঘাটতি প্রকট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ ভারত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি করলেও বিপরীতে রপ্তানি করে খুবই কম। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারত থেকে আমদানি করেছিল ৪৮ হাজার ৯৪৭ কোটি ৭১ লাখ টাকার পণ্য। অপরদিকে বাংলাদেশ রপ্তানি করে মাত্র ৯ হাজার ২৯৫ কোটি ১১ লাখ টাকার পণ্য। বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৩৯ হাজার ৬৫২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বিশাল এই ঘাটতি কমানো এবং দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান নৌ রুটগুলো আরো অধিক কার্যকর করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ১১টি করে ২২টি পোর্টস অব কল রয়েছে। সেগুলো হলো- বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, মংলা, সিরাজগঞ্জ, আশুগঞ্জ, রাজশাহী, সুলতানগঞ্জ, চিলমারী, দাউদকান্দি, বাহাদুরাবাদ, পানগাঁও এবং ভারতের কলকাতা, হলদিয়া, করিমগঞ্জ, পান্ডু, শিলঘাট, ধুলিয়ান, ময়া, কোলাঘাট, সোনামুড়া, জগিগোপা ও ধুবরী। এর সাথে দুটি করে এঙটেন্ডেড ‘ পোর্টস অব কল’ হলো- বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ পোর্টস অব কল এর আওতায় ঘোড়াশাল এবং পানগাঁও পোর্টস অব কল এর আওতায় মুক্তারপুর। ভারতের কলকাতা পোর্টস অব কল এর আওতায় ত্রিবেণী (বেন্ডেল) ও করিমগঞ্জ পোর্টস অব কল এর আওতায় বদরপুর।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান ‘অভ্যন্তরীণ নৌ ট্রানজিট ও বাণিজ্য চুক্তি’ ১৯৭২ সালে স্বাক্ষরের পর থেকে নবায়নের ভিত্তিতে অব্যাহত রয়েছে। এতে নৌ প্রটোকলও মেয়াদ শেষে নতুন করে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে বলবৎ রয়েছে। ইতোমধ্যে পিআইডব্লিউটিটি এর দ্বিতীয় সংযোজনীপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে।
দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকের বিষয়ে ইতোমধ্যে এজেন্ডা তৈরিসহ বিভিন্ন বিষয় নির্ধারণে নৌ পরিবহন সচিবের সভাপতিত্বে উচ্চ পর্যায়ের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নৌ প্রটোকল আরো কার্যকর এবং দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর এ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে বলেও সূত্র জানায়।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা গত ১১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। নৌ পরিবহন সচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধিদল নয়াদিল্লীর বৈঠকে যোগ দেবেন বলেও তিনি জানান।