চেন্নাই টেস্টের প্রথম ইনিংসে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত বোলিং করে রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে (পেস ও স্পিন মিলিয়ে) ভারতের মাটিতে টেস্টে ৫ উইকেট শিকারের অনন্য কীর্তি গড়লেন হাসান মাহমুদ। চলতি মাসের প্রথম দিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন হাসান। সেটি ছিল টেস্ট ক্যারিয়ারে হাসানের প্রথম ফাইফার। গতকাল শুক্রবার ভারতের মাটিতে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মত ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখালেন। আর এই ফাইফারের সঙ্গে বড় এক রেকর্ডের মালিকও হয়ে গেলেন ২৪ বছর বয়সী এই টাইগার পেসার। চেন্নাই টেস্টের প্রথম দিনে ৪ উইকেট শিকার করেছিলেন হাসান মাহমুদ। গতকাল দ্বিতীয় দিনে ভারতের জাসপ্রিত বুমরাহর উইকেট নিয়ে ইনিংসে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন তিনি। ৫ উইকেট শিকার করতে হাসান খরচ করেছেন ৮৩ রান। টেস্টে ২০২০ সালের পর দ্বিতীয় বোলার হিসেবে ভারতের মাটিতে ৫ উইকেট শিকার করলেন হাসান মাহমুদ। সর্বশেষ রোহিত শর্মাদের বিপক্ষে ভারতে এসে ফাইফার পূর্ণ করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদি। এমনকি গত ১৭ বছরে ভারতের মাটিতে ৫ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়তে পারেননি কোনো এশিয়ান পেসার। আর সেটা করে দেখালেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ। সর্বশেষ ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন পাকিস্তানের পেসার ইয়াসির আরাফাত। ভারতের মাটিতে এর আগের টেস্ট সেরা বোলিং এর রেকর্ডটি ছিল আরেক পেসার আবু জায়েদ রাহির। ২০১৯ সালে ইন্দোর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৫ ওভার বল করে ১০৮ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়েছিলেন আবু জায়েদ রাহি। ওয়ানডে ফরম্যাটে ভারতের মাটিতে সেরা বোলিং ফিগার বাংলাদেশের স্পিনার মাহেদি হাসানের। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ ওভারে ৭১ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন মাহেদি। ভারতের মাটিতে টি–টোয়েন্টিতে সেরা বোলিং ফিগারটি অবশ্য কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের। ২০১৬ সালের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে সুপার টেন পর্বে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ ওভার বল করে ২২ রান রান খরচায় ৫ উইকেট নিয়েছিলেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ। ভারতের বিপক্ষে টেস্টের এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়া বাংলাদেশের পঞ্চম বোলার হলেন হাসান মাহমুদ। এর আগে ভারতের বিপক্ষে ২০০০ সালে ঢাকায় বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয় ১৩২ রানে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। এরপর ২০১০ সালে চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সাকিব আল হাসান ৬২ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। একই বছর অর্থাৎ ২০১০ সালে একই ভেন্যু চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের পেসার শাহাদাত হোসেন রাজিব ৭১ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। এবং সবশেষ ২০২২ সালে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ৬৩ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন ভারতের বিপক্ষে।
একদিক থেকে সবার চাইতে এগিয়ে এখানে হাসান মাহমুদ। তা হচ্ছে ভারতের মাটিতে তিনি প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিতে পেরেছেন টেস্টের এক ইনিংসে। যেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন বিশ্বের সেরা সব বোলারদের পাশে। বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং ইউনিটটা এখন বেশ শক্তিশালী। যে ইউনিটের অণ্যতম সেরা অস্ত্র হাসান মাহমুদ। সবে ক্যারিয়ারটা শুরু হয়েছে এই তরুণ পেসার হাসান মাহমুদের। এরই মধ্যে কেবলই চতুর্থ টেস্ট খেলছেন এই তরুণ। এরই মধ্যে ১৯ উইকেট তুলে নিয়েছেন হাসান মাহমুদ। যেভাবে বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং ইউনিট এগিয়ে যাচ্ছে তাতে এই তরুণের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা।