শেষ দুই ম্যাচে ব্যাটিংটা মোটেও ভাল হয়নি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের। সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে বোলারদের কল্যাণে কোনরকমে বেঁচে ফাইনালে গেলেও ভারতের মেয়েদের সাথে আর পেরে উঠেনি লতা মন্ডলরা। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ইমার্জিং নারী এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মেয়েদের কাছে ৩১ রানে হেরেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ফলে আরেকবার স্বপ্ন ভঙ্গ হলো নারী ক্রিকেট দলের। শিরোপা জিতে নিল ভারতের মেয়েরা। অথচ লক্ষ্য তেমন বড় ছিল না মোটেও। কিন্তু নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে কোনো সম্ভাবনাই তৈরি করতে পারল না বাংলাদেশ ‘এ‘ দল। একশর আগেই গুটিয়ে গিয়ে রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হলো তাদের। হংকংয়ের মিশন রোড গ্রাউন্ডে নারী ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপের ফাইনালে ১২৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪ বল বাকি থাকতে ৯৬ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতকে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরুতে আটকে রাখেন মারুফা আক্তার, সানজিদা আক্তার, নাহিদারা। পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে ভারত করে ২৮ রান। ভারতের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গে ২৮ রানে। অধিনায়ক শ্বেতা সেরওয়াথ ফিরেন ১৩ রান করে। আরেক ওপেনার উমা ছেত্রিতেক ফেরান রাবেয়া খান। ২০ বলে ২২ রান করেন তিনি। তবে তিন নম্বরে নামা দিনেশ ভ্রিন্দা এবং পাঁচ নাম্বারে নামা কনিকা আহুজা রানের গতি কিছুটা বাড়ান। মুলত এদতুজনের ব্যাটে লড়াই করার মত পুজি পায় ভারত। যদিও শেষের দিকের ব্যাটাররা তেমন কিছু করতে পারেনি। তবে ভ্রিন্দা এবং কনিকার ব্যাটে চড়ে ১২৭ রান সংগ্রহ করে ভারত। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ভ্রিন্দা করেন ২৯ বলে ৩৬ রান। আর ৪টা চারের সাহায্যে ২৩ বলে ৩০ রান করেন কনিকা। বাংলাদেশের পক্ষে ৪ ওভারে ১৩ রানে ২ উইকেট নেন নাহিদা। রাবেয়া খান ১৪ রানে নিয়েছেন এক উইকেট। ইমার্জিং দল হলেও বাংলাদেশের স্কোয়াডে ছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এক ঝাঁক ক্রিকেটার। ফাইনালের একাদশে ওপেনার সাথি রানি ছাড়া বাকি সবাই খেলেছেন জাতীয় দলের হয়ে। কিন্তু ভারতের অনূর্ধ্ব–১৯ দলের ক্রিকেটারদের সাথে পেরে উঠেনি। ১২৮ রান তাড়া করতে নেমে ১২ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৯ রানে আরেক ওপেনার সাথী রানী ফিরেন ১৩ রান করে। এরপর একে একে ডালিয়া, মুর্শিদা, লতা মন্ডল এবং স্বর্ণ আকতার ফিরেন দুই অংকের ঘরে যাওয়ার আগেই। সোবহানা মোস্তারি ভালো শুরু করলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। কনিকার বলে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে করেন ২২ বলে ১৬ রান। টপ–অর্ডারের ব্যর্থতার পর মিডল–অর্ডারের ব্যাটাররাও পারেননি ভালো কিছু করতে। আর লোয়ার অর্ডারতো দাড়াতেই পারেনি। আগের ম্যাচের জয়ের কারিগর নাহিদা আক্তার অপরাজিত থাকেন ১৭ রান করে। এছাড়া ১৬ রান আসে অতিরিক্ত থেকে। ফলে ৪ বল বাকি থাকতে ৯৬ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ নারী দল। আর তাতেই ভারতের মেয়েরা শিরপো উল্লাসে মাতে। পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে অভিজ্ঞতার কোনো ছাপ রাখতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা তাদের ব্যাটিংয়ে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে মুর্শিদা খাতুনের হাফ সেঞ্চুরি ছাড়া টপ–অর্ডারের কেউই তেমন রান পাননি। আর ফাইনালে এসে সে ব্যাটিংই ভরাডুবির কারন হলো। ভারতের পক্ষে শ্রেয়াঙ্কা ১৩ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। তবে ব্যাট হাতে ২৩ বলে অপরাজিত ৩০ রান ও বোলিংয়ে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন কনিকা আহুজা। টুর্নামেন্টের সেরা বোলারের স্বীকৃতি পেয়েছেন দুই ম্যাচে ৭ ওভারে ১৫ রানে ৯ উইকেট নেওয়া শ্রেয়াঙ্কা।