ভাটিয়ারীসহ গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়কে বাস-ট্রাক টার্মিনাল করতে চায় চসিক

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চেয়ে চিঠি

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৮ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ

যানজট নিরসন ও সুষ্ঠু সড়ক ব্যবস্থাপনার স্বার্থে ভাটিয়ারীসহ গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়কে বাস-ট্রাক টার্মিনাল করতে চায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এজন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চেয়েছে সংস্থাটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই নগরীতে বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের দাবি ছিল বিভিন্ন মহলের। গুরুত্বপূর্ণ শহর হওয়ায় ৬১টি জেলা থেকে দৈনিক আনুমানিক পাঁচ হাজারের বেশি বাস নগরীর ব্যস্ততম সড়ক ডিটি রোড হয়ে নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যাতায়াত করছে। এর সঙ্গে আছে তিন পার্বত্য জেলা, কক্সবাজারসহ আন্ত:জেলার যানবাহন। এছাড়া বন্দর থাকায় প্রতিদিন গড়ে কয়েক হাজার ছোট-বড় ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি আসা-যাওয়া করে শহরে। টার্মিনাল না থাকায় যত্রতত্র ট্রাকগুলো দাঁড়িয়ে থাকে। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় যানজট নিরসনে বায়েজিদের অক্সিজেন এলাকার কুলগাঁওয়ে বাস-ট্রাক টার্মিনাল প্রকল্পের কাজ চলছে চসিকের। এর বাইরে ভাটিয়ারীসহ গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়কে নতুন করে বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা আছে সংস্থাটির।
এদিকে গতকাল সোমবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বরাবর বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একটি উপানুষ্ঠানিক পত্র দেন চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। এতে টার্মিনাল নির্মাণের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর, সদরঘাট লাইটারেজ জেটি, কদমতলী ও পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকায় গড়ে উঠা দেড় হাজারের অধিক ট্রান্সর্পোট এজেন্সি এবং চাক্তাই-খাতুনগঞ্জসহ নগরীর অন্যান্য বাণিজ্যিক এলাকার পণ্যবাহী ৮-১০ হাজারের বেশি ট্রাক, ট্রেইলার ও কাভার্ডভ্যানসহ অন্যান্য পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করছে। কিন্তু এসব গাড়ির জন্য টার্মিনাল নেই বললেই চলে।
প্রশাসক বলেন, প্রতিনিয়ত চট্টগ্রাম বন্দর ও চাক্তাই-খাতুনগঞ্জসহ নগরীর বাণিজ্যিক এলাকার কার্যক্রম বাড়ছে, স্থাপিত হচ্ছে নতুন নতুন শিল্প কারখানা। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভারী যানবাহনের সংখ্যা। কিন্তু সে অনুযায়ী মহানগরীতে বাড়েনি টার্মিনালের সংখ্যা। ফলে চট্টগ্রামে টার্মিনাল সংকট এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে।
পত্রে বলা হয়, টার্মিনাল সংকটের কারণে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ও বড় সড়কগুলোতে বাস-ট্রাকগুলো নিয়মের তোয়াক্কা না করে যেখান-সেখান থেকে দেশের বিভাগীয় শহর ও জেলা-উপজেলাসহ শহরের অভ্যন্তরীণ যাত্রী উঠা-নামা করছে। রাস্তার ওপর পণ্যবাহী ট্রাক ও অন্যান্য ভারী গাড়িতে মালামাল লোড ও ডেলিভারিসহ যানবাহন মেরামতের কাজ করা হচ্ছে। তাছাড়া বাস-ট্রাক ও অন্যান্য ভারী যানবাহনগুলো অপেক্ষমাণ সময়ে টার্মিনালের অভাবে রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে থাকে। এতে রাস্তা সংকুচিত হয়ে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। যানজটের কারণে মানুষের অনেক মূল্যবান সময় ও অর্থের অপচয় হচ্ছে।
প্রশাসক বলেন, যানজটের কারণে বিমানবন্দর যাতায়াতকালে দেশি-বিদেশি যাত্রীর বিমানের গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইট মিস হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও চট্টগ্রামের অধিকাংশ রাস্তা ৬-১০ টন বোঝার গাড়ির জন্য নির্মাণ করা হলেও চট্টগ্রাম বন্দরের ৩০-৪০ টনের বোঝা নিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। ফলে নগরীর অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং নগরবাসীর জন্য চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
এ অবস্থায় জনগণের চলাচলের জন্য সুষ্ঠু সড়ক ব্যবস্থাপনা ও যানজট নিরসনে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ স্থলে বিশেষ করে ভাটিয়ারী এলাকায় বাস ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা খুব প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন প্রশাসক। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রীর সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে নিউমোনিয়ায় ৪ শিশুর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধযুবদল নেতা বাবুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ বিএনপির