রাউজানের উপজেলা সদরের প্রাচীন স্থাপনা রাউজান–রাঙ্গুনিয়া পাবলিক হলটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত আধাপাকা হলটি এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পরিত্যক্ত। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা এই প্রাচীন প্রতিষ্ঠানটির একটি অংশ ভেঙে পৌরসদরে যোগাযোগের জন্য বিকল্প একটি সড়ক পথ করা হচ্ছে। অবশিষ্ট অংশে সাংষ্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য সংষ্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে চার তলা বিশিষ্ট একটি অডিটরিয়াম নির্মাণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের আমলে তৎকালিন অবিভক্ত রাউজান–রাঙ্গুনিয়ার মানুষের জন্য এই পাবলিক হলটি নির্মাণ করেছিলেন তৎকালীন সার্কেল অফিসার নিজাম উদ্দিন। আধাপাকা টিন সেটের এই হলটির ভিতরে করা হয়েছিল কাঠের তৈরি গ্যালারি। এই হলে চলতো সভা সেমিনার, নাটকসহ নানা ধরনের সাংষ্কৃতিক কর্মকাণ্ড। যুগের আধুনিকতার ছোঁয়ায় সাংষ্কৃতিক চর্চা ও সভা সেমিনারের জন্য নতুন নতুন অডিটরিয়াম নির্মাণ করা হলে প্রাচীন এই প্রতিষ্ঠানটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায় প্রাচীন এই হলের ছাউনির সব টিন জং ধরে ছিদ্র হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানিতে ভিতরের সবকিছু পঁচে সেঁতসেঁৎে হয়ে আছে। দেয়ালগুলোতে ধরেছে ফাটল, তরুলতার মাঝে সাপপোকারা বাসা বেঁধেছে।
দেখা গেছে, হলের পশ্চিম অংশের বর্ধিত অংশের একটি ছোট কক্ষ কয়েকজন শ্রমিক ভেঙে ফেলছেন। কাজে থাকা শ্রমিকরা বলেছেন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই অংশটি ভেঙে করা হবে মাদরাসা রোড সংযোগ হয়ে আসা নতুন রাস্তা। যেটি উপজেলা সদরের প্রবেশ পথ সৃষ্টি করবে।
স্থানীয় সাংষ্কৃতিক কর্মীদের একজন মোহাম্মদ হাসান ঐতিহ্যের প্রতীক জানিয়ে বলেছেন, এই হলটির সাথে রাউজান–রাঙ্গুনিয়াবাসীর শিক্ষা সাংষ্কৃতিক সম্পর্ক। এই ভাঙার দৃশ্য দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এই হলটি না ভেঙে সংষ্কার করে টিকিয়ে রাখলে ভাল হতো।
এ বিষয়ে রাউজানের সহকারী কমিশনার ভূমি ও পৌর প্রশাসক অংছিং মারমা বলেন, হলটি এখন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসক পরিদর্শন করতে এসে এটি দেখে সর্বসাধারণের জন্য ঝুঁকিমুক্ত করতে নির্দেশ দিয়ে গেছেন। তাছাড়া উপজেলা সদরে আসা যাওয়ায় সারাক্ষণের যানজট পূর্ণ ফকিরহাটের রাস্তার উপর চাপ কমাতে নতুন নির্মিত সড়কটির প্রবেশ মুখ তৈরিতে হলের বর্ধিত অংশের ফাটল ধরে থাকা কক্ষ ভাঙা হচ্ছে। এখানে চার মিটার প্রস্থ সড়ক মুখ থাকবে। এই কর্মকর্তা জানান, হলটির অবস্থানে নতুন একটি চার তলা ভবন নির্মাণ করা হবে সংষ্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে। এই প্রকল্প এখন চূড়ান্ত হয়েছে। তিনি জানান প্রাচীন হলের জায়গাটি মূলত খাস খতিয়ানভুক্ত।












