ভাগ্নি জামাইয়ের হাতে খুন

সুদের টাকা নিয়ে বিরোধ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৪:২৭ পূর্বাহ্ণ

নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন পশ্চিম ষোলশহর নাজিরপাড়ায় সুদের টাকা নিয়ে ঝগড়ার এক পর্যায়ে মাসি শাশুড়ি মঞ্জু দেবীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে ভাগ্নি জামাই লিটন কান্তি দে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের পর ঘাতক ভাগ্নি জামাই লিটন সারারাত ওই ঘরে থেকে ভোরে পালিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। গতকাল রোববার ভোরে পুলিশ ভাগ্নি জামাই লিটন কান্তি দেকে (৪০) ফটিকছড়ি থেকে গ্রেপ্তার করার পর জিজ্ঞাসাবাদে তার মাসি শাশুড়ি মঞ্জু দেবীকে শ্বাসরোধ করে খুন করার কথা স্বীকার করেছে।

গত শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর পাঁচলাইশ থানার পশ্চিম ষোলশহরের নাজির পাড়ার বাসা থেকে ৫৫ বছর বয়সী মঞ্জু দেবীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত মঞ্জু দেবী পটিয়ার কুলাংগিরি বিপিন সাধুর বাড়ির মৃত সঞ্জয় দেবের স্ত্রী। তারা পাঁচলাইশ থানাধীন নাজিরপাড়ার রাহুল শীলের বিল্ডিংয়ে থাকতেন।

এ ঘটনায় মঞ্জু দেবীর ছেলে উজ্জ্বল দেব বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় ঘাতক লিটন কান্তি দেকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছে।

পুলিশ জানায়, ঘাতক লিটন গত শুক্রবার রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে তার মাসি মঞ্জু দেবীকে ঘাড়ে আঘাত করে অচেতন করে। পরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে। সারারাত ওই বাসায় থাকার পর শনিবার সকালে লিটন পালিয়ে রাঙামাটি চলে যায়। বিকালে সেখান থেকে ফিরে রাউজানে নিজের বাড়িতে থাকে এবং রাতে আবার ফটিকছড়ি উপজেলায় বোনের বাড়িতে চলে যায়।

এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় নাজিরপাড়ার বাসা থেকে মঞ্জু দেবীর মরদেহ যখন উদ্ধার করা তখন মঞ্জু দেবীর ছেলে উত্তম দেবকেও অর্ধচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।

পাঁচলাইশ থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লিটন তার মাসি শাশুড়িকে শ্বাসরোধ করে খুন করার কথা স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে লিটন জানিয়েছে, প্রথমে খাবারে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে উত্তমকে অচেতন করা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে মঞ্জু দেবীকে ঘাড়ে আঘাত করে এবং গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়।

পুলিশ জানায়, মঞ্জু দেবী স্থানীয় কলোনীতে সুদের ব্যবসা করতেন। ৬ মাস আগে মঞ্জু দেবী তার ভাগ্নি জামাই লিটকে ফোন করে, তার নিজের ছেলের (উত্তম দেব) কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়ে দিতে অনুরোধ করেন। বিনিময়ে প্রতিমাসে লিটনকে এক হাজার টাকা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এই লেনদেনের বিষয়টি উত্তমকে না জানানোর জন্যও অনুরোধ করেন। এরপর লিটন তার বাড়ির দলিলের কপি উত্তমের কাছে জমা রেখে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়ে মাসি শাশুড়িকে দেন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ওই টাকা তার পরিশোধের কথা ছিল। উত্তমের কাছ থেকে নেওয়া ৫০ হাজার টাকা নির্ধারিত তারিখে শোধ করতে না পারায় তার সঙ্গে লিটনের ঝামেলা বাঁধে। বিষয়টি নিয়ে মঞ্জু দেবীর সঙ্গেও কয়েকদিন আগে লিটনের বিরোধ সৃষ্টি হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঘাইছড়িতে ইউপিডিএফের কালেক্টরকে গুলি করে হত্যা
পরবর্তী নিবন্ধইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণ প্রকল্পে গতির আশা