‘ভাই, আমি সুমাইয়াকে মাইরা ফালাইছি, আমি আর বাঁচমু না, আমি আত্মহত্যা করুম’ শুক্রবার ভোররাতে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন রমজান আলী। ওপাশ থেকে প্রবাসী সম্বন্ধী হতভম্ব হয়ে কথাগুলো শুনলেও কিছুতেই যেন ঘটনা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তবে শনিবার সকালে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধারের পর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হন। মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব জামালপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপর স্বামী গা ঢাকা দিলেও কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মহেশখালী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
সুমাইয়ার দাদা মোহাম্মদ ছৈয়দ কবির জানান, কয়েক বছর আগে পানিরছড়া এলাকার হারুন রশিদের মেয়ে সুমাইয়ার সঙ্গে পূর্ব জামালপাড়ার রাজমিস্ত্রি শ্রমিক রমজান আলীর বিয়ে হয়। তাদের ঘরে রয়েছে দুই সন্তান। বিয়ের পর থেকে নানা কারণে তাদের সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। স্বামী রমজান বদ মেজাজি ও সন্দেহপ্রবণ ছিল। সামান্য কারণেই সুমাইয়াকে মারধর করত। পারিবারিক কলহ দিন দিন বাড়তে থাকে। কয়েকবার সালিশ বৈঠকও হয়, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। শুক্রবার ভোররাতে সেই দীর্ঘ নির্যাতনের চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে। সুমাইয়াকে হত্যার পর রমজান ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। ফোনও বন্ধ করে দেয়। এর আগে অবশ্য রমজান তার প্রবাসী সম্বন্ধীকে ফোন করে হত্যার দায় স্বীকার করে। খবর পেয়ে মহেশখালী থানার ওসি মোহাম্মদ কাইছার হামিদের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি কাইছার হামিদ বলেন, হোয়ানকে চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ হত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। লাশের গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে মৃত্যুর আসল কারণ। গ্রেপ্তার রমজান আলীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।