বাংলা সংগীতের ইতিহাসে কিংবদন্তি পপ তারকা মাহফুজ আনাম জেমস। ভক্তদের কাছে যিনি ‘গুরু’, ‘নগরবাউল’ ও ‘ঝাঁকড়া চুলের গিটারম্যান’ নামে পরিচিত। সমপ্রতি এসব গল্প শুনিয়েছেন আলোকচিত্রশিল্পী নজরুল সৈয়দ। জেমসের জন্মদিন স্মরণে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, অরুণাপল্লীর উল্টোদিকের খোলা জায়গাটায় খুব বিখ্যাত একটা গান তৈরির ইতিহাস আছে। গান তৈরির নেপথ্যে একটি ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদের ছবি তোলা, এমনটাই জানিয়ে আলোকচিত্রশিল্পী বলেন, বছর ত্রিশেক আগে। জেল থেকে বলছি, পালাবে কোথায়, প্রিয় আকাশি, ভালোবাসার যৌথ খামার ইত্যাদি গেয়ে রকস্টার জেমস ততদিনে গুরু হয়ে উঠছেন। হয়ে উঠছেন ‘নগর বাউল’ তকমায় নতুন ক্রেজ। আনন্দভুবন নামে তখন দারুণ স্মার্ট এক বিনোদন পত্রিকা ছিল। মেজাজই আলাদা, এর আগে বাংলাদেশের কোনও বিনোদান ম্যাগাজিন বোধহয় ভাবতে পারেনি সিনেমার নায়িকা ছাড়া একটা ‘ব্যাটাছেলে’র ছবি দিয়ে প্রচ্ছদ করা যেতে পারে, আনন্দভুবন ভেবেছিল। প্রথমবারের মতো জেমস ভাইয়ের ছবি ছাপা হয়েছিলো কোনো বিনোদন ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে, ঈদসংখ্যায়ও। জেমসের গলায় গামছা আসার গল্প প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তো সেই ছবি তুলতেই আনন্দভুবন টিম গিয়েছিল সাভারে। স্থানীয় এক কৃষক আসিরুদ্দিন মন্ডল একটা গামছায় করে গুড় আর মুড়ি নিয়ে এলেন, জেমস ভাইকে খেতে দিলেন। সেই আলাপের এক পর্যায়ে আসিরুদ্দিন মন্ডল বললেন এই পথই আমাগো বাপ, পথই আমগো মা। আড্ডার শেষে নিজের চাদরের বিনিময়ে মন্ডল সাহেবের গামছাটা নিয়ে নিলেন জেমস ভাই। তারপর থেকে দীর্ঘ অনেক বছর তার পোশাকের অন্যতম অনুসঙ্গ হয়ে ছিলো গামছা।
দুবছর পর ‘লেইস ফিতা লেইস’ অ্যালবামে আত্মপ্রকাশ করলো ‘পথের বাপই বাপ রে মনা পথের মাই মা, এই পথের মাঝেই খুঁজে পাবি আপন ঠিকানা। পথের দুখই দুখ রে মনা পথের সুখই সুখ, পথের ভীড়েই খুঁজে পাবি অচিন প্রিয় মুখ।’ এরপর? ইতিহাস… ’।