বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারেও ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। তবে টিসিবি’র মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্যে তেল বিক্রি অব্যহত থাকবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর বায়েজিদে বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি গ্যালারি ও বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে দেশের খুঁচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করতে হয়। তেলসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের দর নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কমিটি রয়েছে। সেখানে ব্যবসায়ীরাও আছেন।
তিনি বলেন, এখন মানুষের কষ্ট হচ্ছে। তারপরও আমরা টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে সাধারণ মানুষকে তেল দেয়ার চেষ্টা করেছি। আগামীতেও আমরা করব। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, গত ৬ মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ৬৭ শতাংশ বেড়েছে। যেটা ৭০০ ডলার ছিল, সেটা এখন বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১১শ’ ডলার। সেই দামসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কত ভ্যালু আন্তর্জাতিক বাজারে, কী প্রফিট তারা করবে। যেহেতু দেশের প্রয়োজনে ৯০ ভাগ তেল আমদানি করতে হয়। তাই আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করতে হয়। যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করতে হয়। আগামী রমজান ঘিরে ভোগ্যপণ্যের বিশাল মজুদ রয়েছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রমজান মাস সামনে রেখে ভোজ্যতেল, চিনি, গুড়, খেঁজুর, পেঁয়াজসহ সব পণ্যই ব্যবসায়ী ও টিসিবির মাধ্যমে বিশাল পরিমাণ মজুদ আছে। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেছি। তারা রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখবেন বলে আামদের আশ্বাস দিয়েছেন। চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমদানি করা চাল দেশে আসা শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও চালের দাম কিছুটা বাড়তি। বোরো ধান উঠে গেলে আমাদের আর সমস্যা হবে না। আশাকরি আর দাম বাড়বে না।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সরকারের বিভিন্ন উইং চাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের বাজার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। আমাদের সব রকম প্রস্তুতি রয়েছে বলে মন্তব্য করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ৪ জুন চা বোর্ডে বঙ্গবন্ধু যোগদানের দিনটিকে সরকারিভাবে চা দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি প্রথম বাঙালি যিনি চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসেছিলেন। তিনি মাত্র ১ বছর ৪ মাস চা বোর্ডের দায়িত্বে ছিলেন। এরমধ্যে তিনি অনেক ভালো কাজ করে গেছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু চা গ্যালারি ও বঙ্গবন্ধু কর্নারের উপস্থাপনা খুবই সুন্দর হয়েছে। গ্যালারিটিও ব্যতিক্রম। এ কাজের সাথে সংশিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল জহিরুল ইসলাম, বলেন, মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ চা বোর্ড কর্তৃক নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি গ্যালারি ও বঙ্গবন্ধু কর্নার’ নির্মাণের ক্ষেত্রে কিছু বিশিষ্টতার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। গ্যালারি ও কর্নারের স্থাপত্য শৈলীতে গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে কিছুটা ভিন্নতা আনার চেষ্টা করা হয়েছে। গ্যালারির কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর ছবি স্থাপনের মাধ্যমে জাতির পিতাকে একটি সূর্য হিসেবে কল্পনা করা হয়েছে। সূর্যের দ্যুতি যেমন চারপাশকে আলোকিত করে তেমনি ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন-কর্ম যেভাবে বাঙালি জাতিকে আলোকিত ও উদ্ভাসিত করেছে তা গ্যালারিতে তুলে ধরা হয়েছে। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান, চা বোর্ড সদস্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) নুরুল আলম চৌধুরী, সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য), নাজনীন কাউসার চৌধুরী (যুগ্ম সচিব), আব্দুর রহিম খান (যুগ্ম সচিব), চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান প্রমুখ।