আজ ভয়াল ২৫ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই রাতেই বাঙালি জাতির স্বাধীনতার স্বপ্ন আন্দোলনকে চিরদিনের মতো স্তব্ধ করে দিতে পাক হানাদাররা চালায় নির্মম হত্যাযজ্ঞ। দিবসটি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বাণীতে বলেছেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকাসহ সারা দেশে বিশ্বের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। তিনি দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে সেই কালরাতের সকল শহীদকে স্মরণ করে বলেন, নারকীয় এই হত্যাযজ্ঞে জাতি আজও শোকাহত। জাতি আজ শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করবে গণহত্যার শিকার সব বীর বাঙালিকে। গণহত্যা দিবস স্মরণে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা আর পাক হানাদারদের ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাবে। গণহত্যা দিবসে তাই এবার বাঙালি জাতি আজ হৃদয় থেকেই কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে শহীদ বীর বাঙালিদের।
দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে এক মিনিটের প্রতীকী ব্ল্যাক আউটসহ জাতীয় পর্যায়ে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সারা দেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরিসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে ২৫ মার্চ গণহত্যার স্মৃতিচারণা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। গণহত্যা দিবস পালনের লক্ষ্যে সারা দেশে রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট (১ মিনিট) প্রতীকী ব্ল্যাক আউট (কেপিআই বা জরুরি স্থাপনা ব্যতীত) পালন করা হবে।
একাত্তরের অগ্নিঝরা এদিনে বাঙালি জাতি তথা বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছিল ইতিহাসের জঘন্যতম নৃশংসতা। গণহত্যার নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পাকিস্তানি দানবরা মেতে ওঠে নির্বিচারে স্বাধীনতাকামী বাঙালি নিধনযজ্ঞে। এ রাতেই বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম মুহূর্তটি প্রত্যক্ষ করেছিল বিশ্ববাসী। ঢাকাসহ দেশের অনেক স্থানে মাত্র এক রাতেই হানাদাররা হত্যা করেছিল হাজার হাজার ঘুমন্ত বাঙালিকে। কিন্তু ওই ভয়ঙ্কর রাতে বসে থাকেনি বীর বাঙালিরা। মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষী হয়ে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রথম সম্মুখসমরে পুলিশ বাহিনীর অস্ত্রগুলো গর্জে উঠেছিল আজ থেকে ৫৪ বছর আগে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাযজ্ঞের পর পাক হানাদাররা আঘাত হানে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে। সশস্ত্র প্রতিরোধে পাক হানাদারদের হামলায় দুজন ডিআইজিসহ অসংখ্য পুলিশ সদস্য শহীদ হন। পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশের হেডকোয়ার্টার। এক রাতেই রাজারবাগ পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে।