আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে মাহমুদউল্লাহ থাকছেন কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছিল কদিন ধরেই। তার দলে থাকার পক্ষে বিপক্ষে কথা উঠছিল অনেক। তবে শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তই নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। গতকাল বিশ্বকাপের জন্য চূড়ান্ত দল ঘোষণা করেছে বিসিবির নির্বাচকরা। যাতে মাহমুদউল্লাহর নাম নেই। পরে টি-টোয়েন্টি দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরন শ্রীরাম ও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানালেন, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে রাখা হয়নি অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ‘ফিনিশারের’ ভুমিকা পালন করেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু এই দায়িত্বটা ঠিকঠাক পালন করতে পারছিলেন না অনেক দিন ধরেই। সর্বশেষ ১১ ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর গড় ১৬.৫৪। স্ট্রাইকরেট ১০২.৮২। অধিনায়কত্ব হারানোর বড় কারণ এই অফফর্ম। দলে থাকবেন কিনা এমন আলোচনার পর এশিয়া কাপ খেলতে গিয়েছিলেন। উইকেটেও অনেক সময় ছিলেন। কিন্তু ফিনিশার ভূমিকাটা পালন করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৭ বলে করেছিলেন ২৫। শ্রীলংকার বিপক্ষে অন্য ব্যাটাররা যেখানে আরামে রান তুলেছেন সেখানে মাহমুদউল্লাহ করেন ২২ বলে ২৫। বোঝাই যাচ্ছিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মাহমুদউল্লাহর ঠিক জমছে না।
তার জায়গায় অনেক ভালো ক্রিকেটার যে বসে আছেন তেমনটাও নয়। কিন্তু ফর্ম হারানো ৩৭ বছর বয়সী মাহমুদউল্লাহর চেয়ে নিশ্চয় তরুণ একজনকেই সুযোগ দিতে চাইবে দল। যাতে তৈরি হতে পারেন ভবিষ্যতের জন্য। বিশ্বকাপ দল ঘোষণার পর মাহমুদউল্লাহর বাদ পরার কারণ সম্পর্কে তেমনটাই বলছিলেন প্রধান নির্বাচক ও টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট। গতকাল দল ঘোষণার পর মাহমুদউল্লাহর বাদ পড়া প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন, মাহমুদউল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, সে আমাদের অনেক ভালো ভালো খেলা উপহার দিয়েছে। আমাদের বর্তমান যে টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট, তিনি এক বছরের যে পরিকল্পনা আমাদের দিয়েছেন, সেটা মাথায় রেখে আমরা এগোচ্ছি। সেই অনুযায়ী টিম ম্যানেজমেন্টের সবার সঙ্গে আলোচনা করে সকলের সম্মতিতে মাহমুদউল্লাহকে বাইরে রাখা হয়েছে।
শ্রীরাম মাহমুদউল্লাহকে তুলনা করলেন ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে। দলে দুজনেরই ভুমিকা ফিনিশারের। দুজনই ব্যাটিং করেন ছয় নম্বরে। ধোনিকে যেমন একদিন সরে যেতে হয়েছে তরুণদের গড়ে তোলার চিন্তায় তেমনি মাহমুদউল্লাহকেও ‘বিয়োগে’র কথা ভাবছে দল। শ্রীরাম বলেন, আমি মনে করি আমাদের ক্রিকেট দলের একটি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন। দলে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে আমি সবসময় মাহমুদউল্লাহকে এমএস ধোনির সমান ভাবি। ভারতের হয়ে ধোনির মতোই সে ৬ নম্বরে ব্যাট করেছেন। সে অনেক ম্যাচে ফিনিশিং দিয়েছে। ধোনি তো আর চিরকাল দলের সঙ্গে থাকতে পারে না, তাই না ? কার পর কে আসবে তার জন্য আপনার অবশ্যই একটি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থাকতে হবে। আমার মনে হয় এখনই সঠিক সময় মাহমুদউল্লাহর জায়গা পূরণ করতে পারে এমন কাউকে ভাবার। আপনার কাউকে দরকার। যতক্ষণ না আমরা সেই ভূমিকায় অন্য খেলোয়াড়দের খেলাতে শুরু করি। ততোক্ষণ আমরা তাদের খুঁজে পাব না।