নগরে ‘চাঁদার দাবিতে’ নির্মাণাধীন একটি ভবনে গিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি ছোড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ মুরাদপুর–অক্সিজেন সড়কে রোববার সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলি ছোঁড়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। খবর বিডিনিউজের।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সিসিটিভির এক মিনিট ৫৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, নির্মাণাধীন ভবনটিতে শ্রমিকরা মেশিনে সিমেন্ট আর পাথর মেশানোর কাজ করছিলেন। এসময় ‘হুডি’ পরা এক যুবক অস্ত্র হাতে ফটকে গিয়ে দাঁড়ান। তার পাশ দিয়ে জ্যাকেট পরা এক যুবক ভেতরে ঢুকে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি ছুড়লে শ্রমিকরা দৌঁড়ে পালিয়ে যান। পরে হুডি পরা যুবক হাতে অস্ত্র নিয়ে আর জ্যাকেট পরা যুবককে কোমরে অস্ত্র গুজে সড়ক পার হয়ে চলে যেতে দেখা যায়। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ‘আতঙ্কে’ কেউ কোনো কথা বলছে না। দুয়েকজন কথা বললেও নাম প্রকাশ করতে আগ্রহী নন।
স্থানীয় এক দোকানি বলেন, অস্ত্রধারী যুবকদের তিনি নির্মাণাধীন ভবনটির বিপরীত পাশের সড়ক দিয়ে হেঁটে বের হতে দেখেছেন। তারা নির্মাণ সাইটে ঢোকার পর শ্রমিকরা দৌঁড়ে চলে যান। এদিকে অস্ত্রধারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর সেখানে পুলিশ আসে বলে জানান স্থানীয় আরেক দোকানি। তিনি বলেন, আমরা শুনেছি কেউ একজন ৯৯৯ নম্বরে বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন। এরপর তারা ঘটনাস্থলে আসেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ওসি মো. সোলায়মান বলেন, ‘একটা অভিযানে আছি। পরে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।’ তবে দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে একটি সভায় সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে একজন বড় আসামি অস্ত্র উঁচিয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়েছিল, সে অস্ত্রসহ ধরা পড়েছে। আরও অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করি সন্ধ্যার মধ্যে কোনো সুখবর দিতে পারব।’
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, জায়গাটির মালিক আবদুল জব্বার নামে এক ব্যক্তি। তিনি ও তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তাদের দুই মেয়ের জামাই মো. মিজান ও জসীম সেখানে ভবন নির্মাণ করছেন। মাস দেড়েক আগে সেখানে তারা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন।
তিনি বলেন, শুনেছি সাজ্জাদ বাহিনীর লোকজন পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। টাকার দাবিতে তারা সেখানে গিয়ে হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনায় আতঙ্কের মধ্যে আছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আগে বায়েজিদ চালিতাতলী, হাজীপাড়া এলাকায় সাজ্জাদ বাহিনীর নামে স্থাপনা নির্মাণের সময় চাঁদা দাবি, না পেলে গুলি, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের কথা শুনতাম। এখন তারা হামজারবাগ এলাকায় চলে এসেছে। মূল সড়কের ওপর দিনে–দুপুরে এভাবে গুলি করার ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি।’ তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ জমির মালিকদের কেউই। এমনকি তারা নিজেদের নামও প্রকাশ করতে আগ্রহী হননি।












