বড় হারের শঙ্কায় টাইগাররা

পোর্ট এলিজাবেথ টেস্ট

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ১১ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ

দ্বিতীয় টেস্টে টাইগারদের ভাগ্যে কী আছে তা তৃতীয় দিনেই যেন নিশ্চিত হয়ে গেছে। আরেকটা পরাজয়ের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে মোমিনুল হকরা। ম্যাচের মাত্র তৃতীয় দিন শেষেই ফলাফল যেন উঁকি দিতে শুরু করে। টাইগার স্পিনার তাইজুলের দারুণ সাফল্য সত্ত্বেও দাপুটে ব্যাটিংয়ে বিশাল লিড নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর দিনের শেষ ভাগে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে চরম অস্বস্তিতে বাংলাদেশ। ফলে চতুর্থ দিনে বিশাল হারের শঙ্কা অপেক্ষা করছে টাইগারদের সামনে।
২১৭ রানে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস শেষে তাদেরকে আর ফলোঅনে না ফেলে ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান তুলতেই ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১৩ রানের। সেই লক্ষ্য তাড়ায় খুব দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে ২৭ রান নিয়ে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। এখনও ৩৮৬ রান করতে হবে মোমিনুল হকদের। তাদের হাতে আছে ৭ উইকেট।
গতকাল রোববার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে পোর্ট এলিজাবেথে বৃষ্টির কারণে খেলা কিছুটা বিলম্বে শুরু হয়। তবে শুরু হওয়ার পর দারুণ সূচনা পায় বাংলাদেশ। আগের দিন যেখানে একের পর এক উইকেট পড়ে যাচ্ছিল সেখানে গতকাল সকালে বেশ সহজেই রান তুলতে থাকেন মুশফিক ও ইয়াসির আলী রাব্বি। এরমধ্যে দিনের প্রথম ওভারেই টানা ৩ বাউন্ডারি হাঁকান রাব্বি। মুশফিক ও রাব্বি দুজনেই ছুটছিলেন ফিফটির পথে। কিন্তু ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট ফিফটি থেকে মাত্র ৪ রান দূরে থামেন রাব্বি। প্রোটিয়া স্পিনার কেশভ মহারাজের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ফেরার আগে রাব্বির ব্যাট থেকে আসে ৮৭ বলে ৪৬ রান। বিদায়ের আগে মুশফিকের সঙ্গে তার জুটিতে ৭০ রান যোগ হয়। রাব্বির বিদায়ের পর মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন মুশফিক। ক্যারিয়ারের ২৫তম ফিফটির দেখাও পান তিনি। কিন্তু এক বল পরেই অযথা সুইপ শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। লাঞ্চ বিরতির ঠিক আগের ওভারে বিদায় নেওয়ার আগে মুশফিক ১৩৬ বলে ৮ চারে ৫১ রান করেন। এরপর ব্যাট হাতে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি আর কেউই। তাইজুল ৫, মিরাজ ১১ ও এবাদত শূন্য রানে বিদায় নেন। ২১৭ রানে থামে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। বল হাতে দক্ষিণ আফ্রিকার হার্মার ও মুলডার ৩টি করে এবং ডুয়ানে অলিভিয়ের ও কেশভ মহারাজ ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।
বাংলাদেশকে ফলোঅন করানোর সুযোগ থাকলেও ২৩৬ রানে এগিয়ে থেকে আবার ব্যাটিংয়ে নামে এলগার বাহিনী। ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার এরউই ও ডিন এলগার মিলে তুলে ফেলেন ৬০। দ্রুতগতিতে রান তোলায় মনযোগী ছিলেন তারা। তবে এলগারকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙেন তাইজুল। প্রোটিয়া দলপতির ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ২৬ রানের ইনিংস। এলগারের বিদায়ের পর হাল ধরেন এরউই ও কিগান পিটারসেন। কিন্তু তাদের জুটিতে বড় হতে দেননি তাইজুল। দ্বিতীয় সেশনের একদম শেষ বলে পিটারসেনকে (১৪) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন পিটারসেন, কিন্তু আম্পায়ার্স কল হওয়ায় সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের পক্ষেই যায়। এরপর ৬ রান যোগ হতেই বিদায় নেন এরউই (৪১)। খালেদ আহমেদের শিকার হওয়ার আগে এরউই ৬৬ বলে ৫ চারে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন। এরপর রায়ান রিকেলটনকে (১২) বেশিদূর যেতে দেননি তাইজুল। ইনিংসে এটি তার তৃতীয় ও ম্যাচে নবম উইকেট শিকার। কিন্তু টেম্বা বাভুমা ও কাইল ভেরেইনে মিলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন। বাভুমাকে (৩০) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মিরাজ। পরে উইয়ান মুলডারকে (৬) বোল্ড করে ফেরান এই ডানহাতি স্পিনার। মুলডার বিদায় নিতেই ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে প্রথম ওভারেই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রোটিয়া স্পিনার কেশভ মহারাজের বল তার ব্যাটের কানায় লেগে মুলডারের হাতে জমা হয়। প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকানো এই ওপেনার দ্বিতীয় টেস্টের দুই ইনিংসেই শূন্য রানে বিদায় নেন। একই বোলারের পরের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত (৭)। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ফলাফল তার পক্ষে আসেনি। দলীয় ১১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ঘুরে দাঁড়ানো তো দূরের কথা। তামিম বিদায় নেন ১৩ রান করেই। হার্মারের বলে মুলডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। চতুর্থ দিনের কঠিন সময়ে আজ ব্যাট করতে নামবেন মোমিনুল হক অপ. ৫ এবং মুশফিক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলঞ্চ ভ্রমণে লাগবে এনআইডি বা জন্ম সনদ
পরবর্তী নিবন্ধকেমন হতে পারে ইমরান খানের ভবিষ্যৎ