বিষবাষ্পের ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে চারপাশ
এই ধোঁয়ার কুণ্ডলি যেন পরিয়ে রেখেছে
সমাজের গায়ে এক বিরাগ বসন।
যা কিছু দেখার নয় তা
দেখবো না বলে গান্ধারীর মতো
দুচোখে বেঁধেছি লাল কাপড়।
যা কিছু বলার, তবু আজ বলবো না
তোমাদের গম গম সভায়।
তাই মুখে এঁটেছি আজ লোহার কুলুপ।
মানুষের মতো দেখতে অমানুষগুলোর
জিহ্বা লকলক করছে লোভ, লালসা
হিংসা,বিদ্বেষ আর কামুক মনোবাসনায়।
মানুষের বিবেক, বোধ, সততা, শিষ্টাচার
সব কিছু যেন প্রবেশ করেছে
অনন্ত মহাশূন্যের ব্ল্যাক হোলে।
তাই এ অন্ধ সমাজে আজ
কুমারীর কুমারীত্ব ভেসে যায়
ধর্ষকের হিংস্র থাবায়,
নিষ্পাপ টলটলে রক্তের স্রোতে।
তার কন্ঠে প্রতিবাদের স্বর উঠবে বলে
শরীর থেকে বিচ্ছেদ করা হয় জিহ্বা।
বিবেকহীন সমাজের আঁস্তাকুড়ে
পরে থাকা বেজন্মা শিশুর
করুণ আর্তনাদ শুনতে পায় না কেউ
মগজের খুলি খুলে দেখে না কেউ
পৃথিবীতে ঐ শিশুর আগমনের ইতিহাস।
সমাজের কাঁধে এখন লাশের স্তূপ
মৃত্যু যেন এখন ছেলেখেলা।
এই মহাভার বইতে পারবে তো সমাজ?
প্রিয়জনের ক্রন্দনরোলে ভারী হয়ে উঠেছে
আকাশ, বাতাস, চারপাশ।
অভিশাপের বান ছুটে আসছে তীব্র বেগে।
একদিন ঠিক গ্রাস করে নেবে
এই নিকষ কালো সময়।
ফুটপাথের ল্যাম্পপোস্টের নিচে
মাঝরাতে দাঁড়িয়ে থাকা
সেই ষোড়শী, কিংবা অষ্টাদশী,
কিংবা যেকোনো বয়েসী রমণীর
চোখে পড়ে শুধু জ্বলজ্বলে দুটি চোখ
আর সস্তা মেকাপের ঝলকানি।
চোখে পড়ে না শুধু তার পেটের ভিতর
ক্ষুধার জ্বালা আর নীরব চোখের পানি।
তাই আজ উলঙ্গ সমাজ
দেখবো না বলে গান্ধারীর মতো
দু ‘চোখে বেঁধেছি লাল কাপড়।
যা কিছু বলার তা বলবো না
তোমাদের গমগমে সভায়
তাই মুখে এঁটেছি লোহার কুলুপ।