ডিসেম্বরে বিধ্বস্ত হওয়া দক্ষিণ কোরিয়ায় যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের দুটি ব্ল্যাক বক্স দুর্ঘটনার চার মিনিট আগে রেকর্ডিং বন্ধ করে দেয়, জানিয়েছে দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে দেশটির মাটিতে হওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ এই উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ১৭৯ জন নিহত হন। এর আগে দেশটির তদন্তকারীরা বলেছিলেন, ব্ল্যাক বক্স নামে পরিচিত ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার এবং ককপিটের ভয়েজ রেকর্ডারটির মাধ্যমে বিমান দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা যাবে।
রয়টার্স জানিয়েছে, জেজু এয়ারের ওই ফ্লাইটের পাইলট একটি পাখি আঘাত হেনেছে এমনটি জানানোর চার মিনিট পর রেকর্ডিং বন্ধ হওয়ার ঘটনাটি ঘটে। মন্ত্রণালয়টি এক বিবৃতিতে জানায়, কী কারণে ব্ল্যাক বক্সগুলো রেকর্ডিং করা বন্ধ করেছিল তা বিশ্লেষণ করার পরিকল্পনা করেছে দুর্ঘটনার তদন্তে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ। খবর বিডিনিউজের।
মন্ত্রণালয়টি জানিয়েছে, ভয়েজ রেকর্ডারটি প্রথমে দক্ষিণ কোরিয়ায় বিশ্লেষণ করা হয়েছিল আর কিছু তথ্য যখন পাওয়া যাচ্ছিল না তখন সেটি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। ব্ল্যাক বক্স রেকর্ডারগুলো ককপিটে থাকা পাইলটের যোগাযোগ ও উড়ন্ত অবস্থায় আকাশযানটির সিস্টেম কেমন কাজ করছে তার তথ্য সংরক্ষণ করে রাখে।
পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক দুর্ঘটনা তদন্তকারী সিম জাই–ডং বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ শেষ মুহূর্তের তথ্য হারিয়ে যাওয়া বিস্ময়কর। পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অন্য যে তথ্যগুলো পাওয়া গেছে সেগুলোই তদন্তে ব্যবহার করা হবে এবং তদন্তটি যেন স্বচ্ছ হয় তা নিশ্চিত করা হবে। যে ফলাফল পাওয়া যাবে তা নিহতদের পরিবারগুলোকে জানানো হবে। নিহতদের পরিবারগুলোর কিছু সদস্য বলেছেন, পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তদন্তের নেতৃত্ব দেওয়া উচিত নয় এবং স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করা উচিত ছিল তাদের।
তবে, অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। দুর্ঘটনাটি ঠিক কারণে হয়েছিল তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এমনকি, রানওয়েতে আঘাত হানার সময় বোয়িং ৭৩৭–৮০০ উড়োজাহাজটির ল্যান্ডিং গিয়ার কেন নিচে ছিল না, সেদিকেও নজর দিয়েছেন তারা।
গত ২৯ ডিসেম্বর থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে এসে সকাল ৯টার দিকে (স্থানীয় সময়) দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় জেজু এয়ারের উড়োজাহাজটি রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে একটি সীমানা দেয়ালে আঘাত হানে। এই সংঘর্ষে হওয়া বিস্ফোরণে উড়োজাহজটিতে আগুন ধরে যায়। এ দুর্ঘটনা থেকে মাত্র দুজন রক্ষা পান, তারা বিমানটির লেজের অংশে বসে থাকা দুই ক্রু সদস্য।