ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হওয়ার প্রেক্ষিতে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকার অধিকারী হওয়ায় বাংলাদেশে সুনীল অর্থনীতির (ব্লু-ইকোনমি) বহুমুখী দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। সুনীল অর্থনীতির সরকারি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে উপকূলীয় ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য এবং প্রতিবেশ নিয়ে সমীক্ষা শুরু করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, সমুদ্র সম্পদের টেকসই আহরণ ও পরিবেশসম্মত ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ২৮টি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। একটি কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ‘এসেসম্যান্ট অব কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন বায়োডাইবার্সিটি রিসোর্সেস অ্যান্ড ইকোসিস্টেম টু ইমপ্লিমেন্ট দ্য ব্লু ইকোনমি অ্যাকশন প্লান’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপকূলীয় জাহাজ ভাঙা শিল্প এলাকাকে নিয়ে ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশনকল্পে সেমিনার আয়োজিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে দুই ঘণ্টা ব্যাপী অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক মুফিদুল আলম। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক ড. আবদুল্লাহ আল মামুন। সেমিনারে প্রকল্পের কি-নোট উপস্থাপন করেন টিম লিডার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নিয়ামুল নাসের। ব্লু-ইকোনমি বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেন ঢাবি অধ্যাপক ড. ছগির আহমেদ। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জমির উদ্দিনের সঞ্চালনায় সেমিনারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুল আলমসহ উপজেলা বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জাহাজ ভাঙা শিল্পোদ্যাক্তাদের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মীরাও অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফিদুল আলম বলেন, আইন করে পরিবেশ দূষণ রোধ করা যাবে না। দেশে যেভাবে শব্দদূষণ হচ্ছে, তার প্রভাব মারাত্মক ক্ষতিকর। ঢাকার শ্যামলী এবং চট্টগ্রামের অক্সিজেন এলাকায় সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণের ঘটনা ঘটছে। পার্বত্য অঞ্চলে যেভাবে পাহাড় কাটা হচ্ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে পার্বত্য এলাকাতে পাহাড় থাকবে না বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। জাহাজ ভাঙা শিল্প নিয়ে তিনি বলেন, এ শিল্পের শ্রমিকরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। তারা শ্বাসকষ্টে, চর্মরোগে ভুগছে। তাদের গড় আয়ুতে প্রভাব পড়ছে। আবার পরিবেশ-প্রতিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শুধু দুয়েকটি জাহাজ ভাঙা প্রতিষ্ঠানকে গ্রিন হিসেবে দেখা গেলেও পুরো শিল্পকে সবুজ হিসেবে মূল্যায়ন করা যাবে না। এ শিল্পের দূষণ রোধে উদ্যোক্তাদেরও সচেতন হওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।












