ভালো ফলনের আশায় যেখানে কৃষকরা ধানের বিদেশি জাতের উপর বেশি নির্ভর করে, সেখানে এবার কৃষকদের আশা জাগাচ্ছে ব্রিধান ৯২। দেশীয় জাতের এই ধানে ভালো ফলন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। প্রতি চল্লিশ শতক জমিতেই পাওয়া যাচ্ছে দেড় মেট্রিক টন হারে ধান। যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। জানা যায়, রাঙ্গুনিয়ায় এবার ব্রিধান–২৮ জাতের ধানে নেক ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় ছিলো সকলে। সেখানে কৃষকদের আশা জাগাচ্ছে দেশীয় জাতের ব্রিধান ৯২। ফলনে যা কিনা বিদেশ থেকে আমদানিকৃত অনেক হাইব্রিড জাতের ধানকেও হার মানাচ্ছে এবার। এই জাতের ধান গাছ খুব শক্ত, রোগ ও পোকার আক্রমণও কম বলে বলছেন কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলার ৮ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার খ্যাত রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিলে সুপার ফলনের আশায় আছেন ব্রিধান ৯২ জাতের বোরোধান আবাদকারী কৃষকরা। এটি দীর্ঘ মেয়াদী বোরো ধানের জাত। বিগত তিন বছর ধরে এ জাতের ধানের আবাদ করা হলেও এবার ফলন অন্যান্যবারের তুলনায় বেশি হবে মনে করছেন কৃষকরা। শুধুমাত্র গুমাইবিলেই এ জাতের আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে।
এই বিলের কৃষক নুর উদ্দীন এ জাতের ধান আবাদ করেছেন ৪ একর জমিতে। তিনি বলেন, আমি মোট ১৫ একর জমিতে বোরো ধান চাষ করলেও সবচেয়ে বেশি ফলন পাব বলে মনে হচ্ছে ব্রিধান ৯২ জাতে। এ ধান গাছ খুব শক্ত, যে সমস্ত জমিতে ধান গাছ অল্প বাতাসেই মাটিতে নুইয়ে পরত সে সমস্ত জমিতে এ ধানের চাষ করে আমি খুবই লাভবান হয়েছি। কেননা আমার ধানগাছ এখনো শক্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে। এ জাতের ধানে রোগ ও পোকার আক্রমণও কম। প্রতি চল্লিশ শতক জমিতে দেড় মেট্রিক টন ধান পেতে পারি, যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য।
পূর্ব মরিয়মনগর ব্লকের কৃষক মো ফরিদ উদ্দীন ৮ একর জমিতে, মো. মোকারম ৫ একর জমিতে, কাজল মুৎসুদ্দি ১ একর জমিতে এই জাতের ধানের চাষ করেছেন। তাদের প্রত্যেকেই খুবই সন্তুষ্ট এ জাতটি চাষ করে।
গুমাইবিলে দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার শীল বলেন, আমার ব্লকে এ জাতটির আবাদ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। এটি বোরো মৌসুমে জন্য একটি সুপার জাত। ফলন দেখে যে কেউ চমকে উঠতে পারেন। এ জাতের ফলন হেক্টর প্রতি ৯ থেকে ১০ মেট্রিক টন পর্যন্ত মাঠে পাওয়া যাচ্ছে। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত অনেক হাইব্রিড জাতের ধানের চেয়েও এটির ফলন বেশি।
তিনি বলেন, আমি মনে করি আগামীতে এটির চাষাবাদ এরিয়া আরো অনেক বাড়বে। কেননা রোগ এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ খুবই কম। এটির চাল মাঝারি চিকন এবং ভাত ঝরঝরে। তাই এটির বাজার মূল্যও বেশি।