প্রবাহমান খালের ওপর দুই ফুট প্রস্থের কাঠের সাঁকো। কাঠের পাটাতনের অবস্থাও নড়বড়ে। পারাপারে হরহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা। পা পিছলে খালে পড়ছে পথচারীরা। বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া চড়পাড়া সড়কের শিলখালী খালের উপর নির্মিত বিকল্প কাঠের সাঁকোতে এ চিত্রের দেখা মেলে। তবে তার পাশেই রয়েছে নতুন নির্মিত এক পাকা সেতু। সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি এখনও অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পেকুয়া উপজেলার অন্যতম প্রসিদ্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়সহ আশেপাশের পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাত শতাধিক শিক্ষার্থীর একমাত্র যাতায়াতের পথ চড়পাড়া–বারবাকিয়া সড়ক। শিলখালী ও বারবাকিয়া ইউনিয়নের একাংশের সহজ যাতায়াতের পথও এটি। কিন্তু ব্রিজ নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় গত দুই বছর ধরে সড়কটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বর্তমানে ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক তৈরির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। তাই বিকল্প কাঠের সাঁকো ব্যবহার করে খাল পার হতে হচ্ছে। এটি পারাপারে প্রতিদিন কেউ না কেউ খালে পড়ে আহত হচ্ছে। এলজিইডি পেকুয়া অফিস সূত্র জানায়, যান চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় শিলখালী খালের উপর প্রায় এক কোটি টাকা বাজেটে ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ব্রিজ নির্মাণের কার্যাদেশ পায় চট্টগ্রামের নিপা এন্টারপ্রাইজ। পুরনো ব্রিজ ভেঙে ২০২২–২৩ অর্থ বছরে নতুন ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। যার ৮০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানায়, বর্ষা মৌসুমে খালে পানি বাড়ায় মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে তাদের স্কুলে যাতায়াত করতে হচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়াতে একে অপরের হাত ধরে পার হয় তারা। অনেক সময় অভিভাবক বা স্থানীয়রা তাদের পারাপারে সহযোগিতা করছে। দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত নতুন নির্মিত ব্রিজ চালুর দাবি তাদের।
শিলখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা কাজীউল ইনসান আজাদীকে বলেন, সংযোগ সড়ক তৈরি করে দিলে আপাতত ব্রিজটি ব্যবহার করা যেত। কিন্তু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে অন্তত দশ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। ব্রিজের কারণে সড়কটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এ এলাকার অর্থনীতিতে রিরূপ প্রভাব পড়ছে।
শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইব্রাহিম আজাদীকে বলেন, কার্যাদেশের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ব্রিজ নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়নি। আড়াই বছর সময় নিয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়কের অভাবে তা ব্যবহার অনুপযোগী। খাল পারাপারের সময় কোন শিক্ষার্থী কোনভাবে খালে পড়ে গেলে অপমৃত্যু নিশ্চিত। তাই স্কুলের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগের বিষয় বিবেচনায় আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দ্রুত ব্রিজটি চালুর দাবি জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিপা এন্টারপ্রাইজের দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পেকুয়া উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী আসিফ মাহমুদ আজাদীকে বলেন, ব্রিজের এপ্রোজ রোডের ভ্যারিয়েশন অনুমোদনের জন্য হেড কোয়ার্টারে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে ব্রিজের বাকি কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।