চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঁচ দেশের জোট ব্রিকসের পঞ্চদশ শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে অপ্রত্যাশিতভাবে বাণিজ্য ফোরামে উপস্থিতি এড়িয়ে গেছেন। মঙ্গলবার ওই ফোরামে শি–র প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনথাও, তিনি প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে তার লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান।
বিশ্ব অর্থনীতির এক–চতুর্থাংশের নিয়ন্ত্রণকারী দেশগুলোর জোট ব্রিকসের বার্ষিক এ সম্মেলনে যোগ দিতে সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে পৌঁছান শি। সূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার জোটের বাণিজ্য ফোরামে ভারত, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার নেতাদের পাশাপাশি তারও বক্তব্য রাখার কথা ছিল। কিন্তু চীনের নেতা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। এ বিষয়ে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা বা ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি। খবর বিডিনিউজের।
শি–র বদলে ফোরামে তার লিখিত বিবৃতি পড়ে শোনান চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং। এই বিবৃতিতে শি বিশ্বকে ‘নতুন স্নায়ু যুদ্ধের অতল গহ্বরে’ ঘুমন্ত অবস্থায় হাঁটা এড়ানোর আহ্বান জানান। বিবৃতিতে তিনি বলেন, কিছু দেশ তাদের আধিপত্য ধরে রাখায় অলীক চিন্তায় আচ্ছন্ন, তারা উদীয়মান বাজারগুলিকে ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পঙ্গু করার চেষ্টায় ভিন্ন পথ ধরেছে। যারাই দ্রুত উন্নতি করছে তারাই তাদের দমনের লক্ষ্য হচ্ছে। যারাই এগিয়ে যাচ্ছে তারাই তাদের বাধার মুখে পড়ছে। কিন্তু এসব নিরর্থক। কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করলেও মূলত যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করেই শি এসব কথা বলেছেন বলে ধারণা সিএনএনের।
ব্রিকস নেতাদের মধ্যে একমাত্র শি–ই এ ফোরামে অনুপস্থিত ছিলেন। এমনকি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যিনি আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় এই সম্মেলনে যোগ দেননি, তিনিও অনলাইনের মাধ্যমে ফোরামে যোগ দিয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন।
এই ফোরাম এড়ালেও শি পরে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট ও ব্রিকসের বর্তমান চেয়ার সিরিল রামাফোসার আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেন। এ নৈশভোজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুয়িজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় তার রাষ্ট্রীয় সফরের অংশ হিসেবে শি মঙ্গলবার সকালে রামাফোসার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
মাঝখানে ব্রিকসের বাণিজ্য ফোরামে উপস্থিতি এড়ালেও নৈশভোজে নিমন্ত্রণকর্তা ও উপস্থিত অন্যান্য বিশিষ্টজনদের সঙ্গে যোগ দেন তিনি। শি কেন বাণিজ্য ফোরামে উপস্থিত হলেন না, তার কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম বা দেশটির কূটনীতিকরা।