নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক কর্ণফুলী পেপার মিলকে ৪ রঙের মোট ১৬শ মেট্রিক টন কাগজের চাহিদা দিয়েছিল। চাহিদা পাবার সাথে সাথে কর্ণফুলী পেপার মিল কর্তৃপক্ষ কাগজ উৎপাদন শুরু করেন। কেপিএম ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ১৩শ মেট্রিক টন কাগজ নির্বাচন কমিশনকে সরবরাহ করেছে বলে জানা গেছে। অবশিষ্ট ৩শ মেট্রিক টন কাগজ উৎপাদন করা হচ্ছে। নির্বাচনের আগেই সব কাগজ নির্বাচন কমিশনকে সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলেও কেপিএম সূত্রে জানা গেছে।
কর্ণফুলী পেপার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম আনিসুজ্জামান নির্বাচন কমিশনকে ১৩শ মেট্টিক টন কাগজ সরবরাহের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কেপিএমের সর্বস্তরের শ্রমিক–কর্মচারী ও কর্মকর্তা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চাহিদা অনুযায়ী কাগজ উৎপন্ন করে আসছে। ৭৫ বছরের পুরাতন কেপিএম কারখানায় নানাবিধ প্রতিকুলতা থাকা সত্বেও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা চাহিদানুযায়ী কাগজ উৎপন্ন করতে পেরেছি। এবং বেশিরভাগ কাগজ নির্বাচন কমিশনকে সরবরাহ করা হয়েছে।
অবশিষ্ট কাগজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলেও তিনি জানান। কেপিএমের মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন) মইদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশন সাদা, নীল, বাদামি ও গোলাপি রঙের মোট এক হাজার ১৬শ মেট্রিক টন কাগজের চাহিদা দেয়। নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য ৪ রঙের কাগজই ব্যবহার করা হবে। কেপিএম ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জাতীয় নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। আর গুরুত্ব বিবেচনা করেই কেপিএম কাগজ উৎপাদন করেছে। তিনি বলেন, কেপিএম উৎপাদিত কাগজ গুণগতভাবে মানসম্মত, টেকসই এবং রঙ ডিসকালার হয়না।
কেপিএম উৎপাদিত কাগজে তৈরি ব্যালট পেপারে সিল মারলে কালি চুপসাবেনা। এবং দীর্ঘ সময় সংরক্ষনও করা সম্ভব। তাই নির্বাচন কমিশন ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য কেপিএম থেকে কাগজ নিতেই বেশি আগ্রহী হয়।
কর্ণফুলী পেপার মিলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, কেপিএম কারখানার ভবন গুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। কলকব্জাগুলোও ৮০ বছরের পুরাতন। দক্ষ শ্রমিক কর্মচারি স্বল্পতা রয়েছে। উন্নত রাষ্ট্রের কোথাও এরকম পুরাতন মানের কারখানা সচল নেই।
অথচ এই পুরাতন কারখানা থেকেই কেপিএম কর্তৃপক্ষ উন্নতমানের কাগজ উৎপাদন করে আসছে। এজন্য তিনি কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম আনিসুজ্জামানের দক্ষতার প্রশংসা করেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভাগের সর্বস্তরের শ্রমিক কর্মচারি ও কর্মকর্তাদের পরিশ্রমের কথাও উল্লেখ করেন। কেপিএম সিবিএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. শহীদ উল্ল্যাহ ও সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, জাতীয় নির্বাচনে কেপিএম উৎপাদিত কাগজে ব্যালট তৈরি হবে।
সেই ব্যালটে কোটি কোটি ভোটার মূল্যবান ভোট দিয়ে সরকার গঠন করবে। এজন্য কেপিএমের সর্বস্তরের শ্রমিক কর্মচারি ও কর্মকর্তারা আনন্দিত বলেও তারা জানান। প্রতিদিন বিআরটিসি ট্রাক ভর্তি করে ট্রাকের পর ট্রাক কাগজ কেপিএমের গেইট দিয়ে বের হয়ে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে যাচ্ছে এটা দেখে আমরা সবাই উৎফুল্লিত ও উৎসাহিত।