আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে বাংলাদেশের কোনো জুটি আগে কখনো ফাইনালে উঠতে পারেনি। ইউনেক্স–সানরাইজ টুর্নামেন্টে এবার তাই আল আমিন জুমার–ঊর্মি আক্তার জুটি মিশ্র বিভাগে ফাইনালে উঠে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছিলেন। তবে ভারতের জুটিকে হারিয়ে, থাইল্যান্ডের জুটিকে উড়িয়ে আকাশ ছোঁয়ার যে স্বপ্ন ডানা মেলেছিল, তাকে পূর্ণতা দিতে পারেননি আল আমিন জুমার–ঊর্মি আক্তার। ইউনেক্স–সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ–২০২৫ টুর্নামেন্টের মিশ্র দ্বৈতের ফাইনালে মালয়েশিয়ার জুটির কাছে হেরেছেন তারা। পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ ইনডোর স্টেডিয়ামে গতকাল শনিবার সেরা হওয়ার লড়াইয়ে ইসাক আনিফ–ক্লারিসা জান জুটির কাছে ২–০ সেটে হারেন জুমার–ঊর্মি। প্রথম সেটে অবশ্য ছিল দারুণ কিছুর আভাস। প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে লড়াই করে টাইব্রেকারে ২৭–২৫ পয়েন্টে হেরে যান জুমার–ঊর্মি। দ্বিতীয় সেটে একেবারেই বিবর্ণ ছিলেন দুজনে, হেরে যান ২১–১৪ পয়েন্টে। তাতে করে রৌপ্য পদক নিয়েই তুষ্ট থাকতে হয় জুমার–ঊর্মির মতো বাংলাদেশকেও। রুপা পেলেও সোনা জয়ের স্বপ্ন পূরণের খুব কাছাকাছি এসে না পারার হতাশা ফুটে উঠল ঊর্মির কণ্ঠে। মালয়েশিয়ার জুটির বিপক্ষে দ্বিতীয় সেটে নিজেদের মেলে ধরতে না পারার কারণও খুঁজে পেয়েছেন এই শাটলার। ‘অবশ্যই আমরা অনেক সন্তুষ্ট (রুপা পেয়ে), কারণ বাংলাদেশে এই প্রথম আমরা ইন্টারন্যাশনালে ফাইনালে উঠেছি। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। হয়তো চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি, কিন্তু ফাইনালে খেলেছি, এটাতেই আমরা খুশি। দ্বিতীয় সেটে না পারার কারণ) ওরা আসলে দীর্ঘ সময় ধরে অনুশীলন করে, ভালো কোচের অধীনে থাকে এবং ওদের সুযোগ–সুবিধা অনেক বেশি। ওদের স্পন্সর, ট্রেনিং সব কিছুই আমাদের চেয়ে ভালো। আমরা সারা বছর ট্রেনিংয়ের সুযোগ পাই না, এই গ্যাপটুকুই আমাদের পিছিয়ে রেখেছে।’ ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক দিবসের কারণে ফাইনালে কোনো আনুষ্ঠানিকতা রাখা হয়নি। ফাইনালে ওঠার কারণে অর্থ পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের মিশ্র দ্বৈতের তারকা জুটি জুমার–ঊর্মি। বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন দুজনকে পাঁচশত করে মোট ১ হাজার ডলার অর্থ পুরস্কার দিয়েছেন।
একই সঙ্গে শাটলারদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশী কোচসহ সব ধরনের সুযোগ–সুবিধা প্রদানেরও আশ্বাস দিয়েছেন। মিশ্র দ্বৈতের পাশাপাশি গতকাল আরও চারটি ইভেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়।
পুরুষ এককে দুই ভারতীয়র লড়াইয়ে মেইরাবা মাইসনাম ২১–৭ ও ২১–১২ পয়েন্টে নুমাইর শাইককে পরাজিত করেন। নারী এককে চ্যাম্পিয়ন হন যুক্তরাষ্ট্রের ইসিকা জয়সোয়াল। ভারতের তানভি রেড্ডিকে ২২–২০, ২১–২৩ এবং ২১–১৫ পয়েন্টে পরাজিত করে স্বর্ণ জেতেন ইসিকা। পুরুষ দ্বৈতের ফাইনালে ভিয়েতনামের ড্যাং খাহ–ট্রান হোং জুটিকে ২১–১৯ ও ২১–১২ পয়েন্টের ব্যবধান হারান ভারতের নিরঞ্জন–রুবান কুমার জুটি। সবশেষ নারী দ্বৈতের ফাইনালে থাইল্যান্ডের পাত্থারিন– সারিসা জানপেং জুটির কাছে মালয়েশিয়ার গ্যান মিন–তান জিং জুটিকে ২১–৭, ২০–২২ ও ২১–১৫ পয়েন্টে পরাজিত করেন।












