বন্দরনগরীতে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠান চললেও নববর্ষের অনুষ্ঠান কেন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করার বাধ্যবাধকতা থাকবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন চট্টগ্রামের এক সংস্কৃতি কর্মী। গতকাল সোমবার দামপাড়ায় চট্টগ্রাম নগর পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশ কমিশনারের সাথে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজকদের এক সমন্বয় সভায় এ প্রশ্ন তোলেন কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল, যিনি নববর্ষ উদযাপন পরিষদের সদস্য। বাদল বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আমরা অনুষ্ঠান শেষ করার প্রস্তুতি রেখেছি। কিন্তু আমরা দেখছি নগরীতে অনেক রাত পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়। সেগুলোর ক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধকতা থাকে না। নববর্ষের অনুষ্ঠানে কেন সন্ধ্যার মধ্যে শেষ করার বাধ্যবাধকতা থাকবে?’ এর জবাবে সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘এটা একটা প্র্যাকটিস, এটা কোনো আইন না। পার্টিকুলার ওই দিনের ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে সরকারের এবং আমাদের পরামর্শে আমরা সকল অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করতে বলি।’ খবর বিডিনিউজের।
সিএমপি কমিশনার বলেন, নবর্ষের অনুষ্ঠান শুরু হয় ভোর ৬টায়, সেজন্য পুলিশ মোতায়েন হয় সাড়ে ৪টা থেকে। পুলিশের ক্লান্তির একটা ব্যাপার আছে। প্রোগ্রাম যত বেশি লম্বা হয়, ততই ঝুঁকি বাড়ে। আর ওই দিন বেশি বেশি অনুষ্ঠান থাকে। সবগুলো অনুষ্ঠানতো একই সময়ে। বাকি দিনগুলোতে একটা অনুষ্ঠান বলে বেশি সময় ধরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্ভব।’ পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘আপনি একটা পারসপেকটিভে দেখছেন, আমরা একটা দেখি। এখানে পার্টিসিপেন্টদের নিরাপত্তারও একটা বিষয় থাকে। তাদের বাড়ি ফেরার বিষয়টাও দেখতে হয়।’
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে মূলত তিনটি স্থানে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের বড় অনুষ্ঠান হয়। এর একটি ডিসি হিলে, একটি সিআরবি শিরীষ তলায় এবং অন্যটি জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা : সভায় সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘নববর্ষ অনুষ্ঠান নিয়ে আমোদের কোনো দৃশ্যমান ঝুঁকি নেই। তারপরও সম্ভাব্য সকল ঝুঁকি মাথায় রেখে সকর্তকতা ও প্রস্তুতি আছে।’ নববর্ষ ঘিরে অনলাইনে ‘গুজব রটনাকারীদের’ বিষয়ে সজাগ থাকার কথাও বলেন সিএমপি কমিশনার।
আয়োজকদের সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আয়োজন শেষ করার অনুরোধ বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা নির্দেশনাও দেয়া হয় বৈঠকে। অনুষ্ঠানস্থলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের কোনো ধরনের ব্যাগ বহন থেকে বিরত থাকা, সন্দেহজনক কাউকে দেখলে সাথে সাথে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করতে বলা হয়। বৈঠকে জানানো হয়, নববর্ষ ঘিরে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসেবে থানা পুলিশের নিয়মিত মোবাইল টিমের পাশাপাশি পিকেট ডিউটি, ফুট পেট্রোল, চেকপোস্ট স্থাপনসহ সাদা পোশাকের পুলিশের নজরদারি থাকবে। এছাড়া, সোয়াট, বম ডিসপোজাল ইউনিট, কুইক রেসপন্স টিম, ডগ স্কোয়াড কে–নাইন টিমকে স্ট্যান্ড বাই রাখা হবে।